সৌদি আরবে গত বছরের শেষের দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে কিং আবদুল আজিজ উট উৎসব। এবারই প্রথমবারের মতো এই উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন সৌদি নারীরাও। তবে সব প্রতিযোগিতার মতো এখানেও রয়েছে হারজিত। সৌদি তরুণী রাশা আল কুরাশির ভাগ্যেও জোটেনি জয়ের মুকুট। আর প্রতিযোগিতার হেরে গেলে নিজের কাছেই একটি অঙ্গীকার করেছিলেন রাশা। চেয়েছিলেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে হেজাজ শহরে যাবেন উটের পিঠে চড়ে। এতোদিনে নিজেকে দেওয়া কথা রাখছেন তিনি। আল আরাবিয়া শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে রাশা আল আরাবিয়াকে বলেন, আমি নিজের কাছেই প্রতীজ্ঞা করেছিলাম যে যদি জিততে না পারি তাহলে রিয়াদ থেকে হেজাজে আমার উটের পিঠে চড়েই যাব।
প্রতিযোগিতায় হারার পর তিনি এ ব্যাপারে প্রস্তুতি শুরু করেন। সংগ্রহ করতে শুরু করেন অনুমতিপত্র।
পুরো যাত্রাপথে তাকে ১৪ বার বিরতি নিতে হবে পারে। ৭৪২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে তার ২০দিন লাগতে পারে।
শুক্রবার আল-কাসিম প্রদেশের পথে আল-হেফনাতে পৌঁছান রাশা। সেখান থেকে তিনি বলেন, প্রতি ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বিশ্রাম নিতে থামেন।
তিনি আরও বলেন, অসুবিধার পরও এই যাত্রা মরুভূমিতে উটের পিঠে সফর করা তার পূর্বপুরুষদের জীবন সম্পর্কে একটি বাস্তব শিক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছে।
তিনি বলেন, আমি মরুভূমির মেয়ে। আমি উট ভালোবেসে বড় হয়েছি… এবং আমি প্রমাণ করতে চাই যে নারীরাও উট লালনপালনে অংশগ্রহণ করতে পারে। কারণ তারা সব ক্ষেত্রে (অন্বেষণ) করতে সক্ষম এবং তারা সফল হতে পারে।
প্রথমবারের মতো নারীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে উট উৎসবের ম্যানেজার মোহাম্মদ আল হাবিবি বলেন, বেদুইন সমাজে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান আছে। নারীদের উটের মালিকানা আছে। তারা উট দেখাশোনাও করেন। সৌদির ঐতিহাসিক ঐহিত্যের অংশ হিসেবেই এই উৎসবে নারীদের অংশগ্রহণ বলে জানান তিনি।
তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরবে ইসলামী আইনকানুন বেশ কঠোরভাবেই মেনে চলা হয়। তবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৭ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশটিতে নারীদের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। গাড়ির চালকের আসনেও নারীদের হরদম দেখা যাচ্ছে দেশটির রাস্তায়।