রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার রাশিয়ার নতুন পররাষ্ট্রনীতির অনুমোদন দিয়েছেন। ‘রুশ বিশ্বের’ ধারণার ওপর এই পররাষ্ট্রনীতিটি করা হয়েছে।
রাশিয়ার বাইরে বসবাসরত রুশ ভাষাভাষীদের কথিত অধিকার আদায়ে এই দুটি শব্দ ব্যবহার করে থাকে রাশিয়ার রক্ষণশীলরা।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ফাটল ধরেছে রাশিয়ার। আর এমন সময়ই নতুন পররাষ্ট্রনীতির অনুমোদন দিলেন পুতিন। যার মাধ্যমে রুশ বিশ্ব গঠন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
৩১ পৃষ্ঠার এই পররাষ্ট্রনীতিটিকে আখ্যায়িত করা হয়েছে ‘মানবিক নীতি’ হিসেবে। ইউক্রেনে হামলা করার ছয় মাস পর এটি প্রকাশ ও অনুমোদন দিয়েছেন পুতিন। যেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়াকে ‘রুশ বিশ্বের ঐতিহ্য এবং আদর্শকে রক্ষা, বাঁচানো এবং বৃদ্ধি’ করতে কাজ করতে হবে।
পুতিনের অনুমোদিত নতুন পররাষ্ট্রনীতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া স্লাভিক দেশগুলোর সঙ্গে যেমন সহযোগিতা বাড়াবে, তেমনি চীন–ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে তৎপর থাকবে। মধ্যপ্রাচ্য, লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার করা হবে।
এ ছাড়া ২০০৮ সালে জর্জিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের পর মস্কোর পক্ষ থেকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়া আবখাজিয়া ও ওসেতিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করা হবে। ইউক্রেনে দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলেছে রাশিয়া।
এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের কথা বলে এসব অঞ্চলে মূলত নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধিই করতে চাচ্ছেন পুতিন। তাছাড়া পশ্চিমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ারও পরিস্কার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
তাছাড়া নতুন পররাষ্ট্রনীতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্য দেশে যেখানে রুশ ভাষাভাষীরা বসবাস করেন তাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করবে রাশিয়া।
এর মাধ্যমে মূলত ইউক্রেনে নিজেদের কথিত বিশেষ সামরিক অভিযানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ রুশ ভাষাভাষীদের রক্ষা করার অজুহাতেই ইউক্রেনে অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর রাশিয়ার বাইরে ২ কোটি ৫০ লাখ রুশ ভাষাভাষী রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। তাদের ব্যাপারে সব সময় কথা বলেন পুতিন। তার মতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার কারণে এসব রুশভাষীরা দুর্ভোগে আছেন। এসব মানুষদের রক্ষা করার কথা বলেছেন তিনি।
সূত্র: রয়টার্স