রাম বসাক, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর মেয়রের উদ্যোগের ফলে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ অনুর্ধ্ব-১৫ গোল্ডেন বুট জয়ী ও সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী নারী ফুটবলার আঁখি খাতুনকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ৮ শতাংশ জমির ওপর করা মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে মামলার বাদী হাজী মকরম প্রামানিক।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মামলার বাদী হাজী মকরম প্রামানিক সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বরাবর মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এদিন সকালে পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী ও মামলার বাদী হাজী মকরম প্রামানিক সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একই সাথে মামলা প্রত্যাহারের জন্য শাহজাদপুর থেকে সিরাজগঞ্জ যান।এদিন বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লুৎফুন নাহার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাদীপক্ষ মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। ফলে এ মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে। বর্তমানে ফুটবলার আঁখিকে বরাদ্দ দেওয়া ওই জমিটি এখন সম্পূর্ণ নিঃস্কন্টক।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন- ফুটবলার আঁখির জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ৮ শতাংশ জমির একটি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ৪ জুন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার জমির দলিল হস্তান্তর করেন। সম্প্রতি হাজী মকরম প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তি ওই জমির তাদের দখলে রয়েছে দাবি করে মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার তফসিলে তিনি খতিয়ান উল্লেখ বা জমিটির মালিকানা দাবি করেন নি। সোমবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাদী নিজেই মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করলে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী বলেন- ফুটবলার আখি খাতুন শাহজাদপুরের সম্পদ ও দেশের গর্ব। আমি উদ্যোগ নিয়ে মামলার বাদীর সাথে আলোচনা করে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন এবং সোমবার সকালে আমরা সবাই সিরাজগঞ্জ আদালতে গিয়ে মামলা প্রত্যাহার সম্পন্ন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ফুটবলে অবদান এবং দরিদ্র পরিবারের কথা বিবেচনা করে তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনায় আঁখি খাতুনকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই জমির মালিকানা দাবি করে শাহজাদপুরের একজন ব্যবসায়ী মামলা দায়ের করেন। জমি নিয়ে সমস্যার কথা আঁখি বাফুফে সভাপতিকে জানালে তারা সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন ওই জমির বরাদ্দ বাতিল করে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভূক্ত ৮ শতাংশ জমি আঁখির নামে বরাদ্দ দেয়। গত ৪ জুন এই জমির দলিল আখির পরিবারে হস্তান্তর করা হয়।এদিকে সম্প্রতি আঁখি খাতুনকে বরাদ্দ দেওয়া সেই জমির দখল নিয়ে হাজী মকরম প্রামানিক আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আঁখিসহ পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়।বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলার নোটিশ নিয়ে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা আঁখির গ্রামের বাড়িতে গেলে তার বাবার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে আঁখির বাবাকে পুলিশ শাসায় এবং থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ করা হয়। এ নিয়ে সিরাজগঞ্জসহ দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে।
পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার ওই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করেন। এ ঘটনার পাঁচদিন পর স্ব-ইচ্ছায় বাদী মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন