প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, মুহাম্মদ (সা.) এর দেখানো পথে আমাদের চলতে হবে।
ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আজ এ কথা বলেন। ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একটি মানবিক বিশ্ব’ শীর্ষক আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন-আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। বিশেষ আলোচক হিসেবে অংশ নেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল। অনুষ্ঠানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আমরা যখন মানবিকতার কথা বলি তখন রাসুল (সা.) কে ভুলে যাই। আমরা প্রতিদিন নামাজে আবশ্যিকভাবে (কম্পলসরি) সুরা ফাতেহা পড়ি। যেখানে একটি আয়াত আছে, যে আয়াতের সরল অর্থ হলো- আল্লাহ আমাদের সহজ-সরল পথ দেখান। আমরা জানি সহজ-সরল পথ কোনটা। সেই সহজ-সরল পথ হলো যেটা আমাদের রসুল (সা.) দেখিয়ে গেছেন। সে পথটার কথা আমরা জানি। কোনো সহায় সম্পত্তি তাকে আকৃষ্ট করেনি। তিনি মানুষের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা ছিল মানবিক। তিনি একজন শত্রুর সঙ্গেও মানবিক আচরণ করেছেন। এটা হচ্ছে মানবিক আচরণ।
সহজ-সরল পথ কোনটা এমন প্রশ্ন রেখে প্রধান বিচারপতি বলেন, যে পথ সহায় সম্পত্তিকে আকৃষ্ট করবে না। যে পথটা হবে পরকালের পথ। আল্লাহ রসুলের দেখানো পথ। আমরা সেখান থেকে ভ্রষ্ট হয়ে কীভাবে সহায় সম্পদ টাকা-পয়সা অর্জন করবো, কীভাবে দুর্নীতি করে বাড়ি-গাড়ি ইত্যাদি করবো তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেছি। যেভাবে হোক আমাদের এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, করোনা মহামারি থেকে আমরা কতটুকু সতর্ক হয়েছি। তারপরও আমরা দুর্নীতি করে যাচ্ছি। মানুষ ঠকাতে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছি। প্রশ্ন হচ্ছে হাশরের মাঠে আমরা আল্লাহর কাছে কী জবাব দেব? রাসল (সা.) আমাদের কী শিখিয়ে গেছেন আর আমরা কী করে বিদায় নিচ্ছি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, মহামারি করোনায় দেশে বিচারক, আইনজীবী মোট ২৬২ জন মারা গেছেন। করোনায় কত লোক চলে গেল তারপরও আমরা কী সতর্ক হয়েছি? এর থেকে আমরা কী কোনো শিক্ষা নেব না? আমরা কতটা মানবিক হয়েছি।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রথম লিখিত সনদ মদিনার সনদের মাধ্যমে সব সম্প্রদায়ের মাধ্যমে এক জাতি গঠনের কথা বলা আছে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি যাতে না হয় সেটি বিদায় হজের ভাষণে বলে গেছেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের চলতে হবে রসুল (সা.) যে পথে দেখিয়ে গেছেন সে পথে। অন্যথায় এসব অশান্তি থেকে মুক্ত হতে পারবো না। পরকালে হাশরের মাঠে কৈফিয়ত দিতে পারবেন না।বাসস