ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জনপদ খুলনায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) দিনভর প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
সড়কে হাঁটু পানি জমেছে।
বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাসের কারণে ক্ষেতের ধানগাছগুলো হেলে পড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলার আগাম শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এদিকে জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ার কারণে কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকার মানুষ বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
এসব এলাকার মানুষের অভিযোগ, নানা সময় বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ মেরামত ও সংস্কার করা হয়। তবে বাঁধের কাজ হয়ে থাকে দায়সারা গোছের। বেড়িবাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতিই যেন ‘নিয়মে’ পরিণত হয়েছে। কাজকর্মে নেই কোনো তদারকি। এ কারণে জোড়াতালি মেরামতের পেছনে শত শত কোটি টাকা সরকার খরচ করলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। বরং পকেট ভারী হচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঠিকাদার সিন্ডিকেট ও রাজনৈতিক একটি মহলের।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলা ও উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রসহ সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা। জেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার পাশাপাশি সব উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এছাড়া উপকূলীয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং করে সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, জেলার ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ জনের জন্য ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে দাকোপে ১১৮টি, বটিয়াঘাটায় ২৭টি, কয়রায় ১১৭টি, ডুমুরিয়ায় ২৫টি, পাইকগাছায় ৩২টি, তেরখাদায় ২২টি, রূপসায় ৩৯টি, ফুলতলায় ১৩টি ও দিঘলিয়ায় ১৬টি।
এদিকে উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চলছে সরকারি-বেসরকারিভাবে মাইকিং।
কয়রার স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি মো. আবু সাঈদ খান বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্কতামূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার পক্ষ থেকে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা, জোড়শিং, খাসিটানাসহ বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রচারণা করা হয়েছে।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আসাদের জন্য শুকনো খাবার, চাল ও টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি।