ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে মিরসরাই উপজেলা এলাকার সমুদ্র উপকূলে থাকা ড্রেজার ডুবে ৮ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে ড্রেজারডুবির ঘটনা ঘটে। উপজেলার ১৬ নম্বর সাহেরখালী ইউনিয়নের বসুন্ধরা এলাকায় বেড়িবাঁধসংলগ্ন সাগরে বালু উত্তোলনের জন্য ওই ড্রেজার মেশিন রাখা ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়ায় ওই স্থানে রাখা ড্রেজার মেশিন ‘সৈকত-২’ পানিতে ভেসে গিয়ে ডুবে যায়। ওই সময় ড্রেজারে থাকা শ্রমিক ইমাম মোল্লা, মাহমুদ মোল্লা, আলামিন, তারেক, আবুল বশরসহ ৮ জন নিখোঁজ হন। তাদের সবার বাড়ি পটুয়াখালীর জৈনকাঠি ও মোল্লাবাড়ি থানায়। দুর্ঘটনার পরপরই অন্য শ্রমিকেরা নৌকা নিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে দেখেন তারা মারা গেছেন।
বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ড্রেজারে থাকা শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ড্রেজারে আমিসহ ৯ জন ছিলাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা শুনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে আসি। তবে বাকিরা সেখানেই ছিল।
ড্রেজার ম্যানেজার রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাস্থলে আরও ছয়টি ড্রেজার রাখা ছিল। সতর্কতা সংকেত পেয়ে অন্য সব শ্রমিক নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও দুর্ঘটনায় পতিত ড্রেজারের ৮ শ্রমিক আসেনি। উত্তোলনকারী শ্রমিকরা সাধারণত সবসময় ড্রেজারেই অবস্থান করে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমের ব্যবস্থা রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলার ১৬নং সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজিত একটি ড্রেজারসহ ৮ শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনেছিলাম। সোমবার বিকালে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। তার পরও তারা কেন নিরাপদ আশ্রয়ে গেল না বুঝতে পারছি না।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই অন্য শ্রমিকেরা নৌকা নিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তখন তারা ভেতরে আটকা পড়া শ্রমিকদের মৃত অবস্থায় দেখেন। লাশ উদ্ধারে সাগরে ডুবুরি ও ফায়ার সার্ভিস দল কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, খবর পেয়ে মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।