ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর নতুন জ্বালানির উৎস খুঁজে পেতে মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
তবে সৌদি আরব থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি না পেয়ে শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে তাকে।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দ্য লন্ডন ইকোনমিকের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
বরিস জানান, বুধবার রিয়াদে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের বৈঠক করেন তিনি। এ সময় ক্রাউন প্রিন্সকে তার মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য চ্যালেঞ্জ জানান।
তবে বরিস জোর দিয়ে বলেন, উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি আরো ভালো কিছুর জন্য পরিবর্তিত হচ্ছে। যদিও আধুনিক ইতিহাসে দেশটি তার বৃহত্তম গণ-মৃত্যুদণ্ডের পরে আরো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে।
সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাতে আরব নিউজ জানিয়েছে, এই সফরে অংশীদারি জোট গঠনের জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ সময় দুই নেতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং এর বিকাশের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন, অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ও।
অপরদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ঘোষণা করেছে তারা ইউক্রেনে আক্রমণের কারণে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কম কিনবে। এজন্য বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে।
সৌদি আরব তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের জোট ওপেকের বৃহত্তম সদস্য। সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমাতে সাহায্য করার ক্ষমতা রয়েছে দেশটির। এ কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে সৌদি আরবের সদিচ্ছা প্রয়োজন।
এর আগে সৌদি আরবের প্রতিবেশী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন বরিস জনসন। তবে আবুধাবিতে ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে দেখা করার পর বৈঠকের বিবরণে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি, যাতে জ্বালানি প্রতিশ্রুতির কথা উঠে এসেছে।
আবার সৌদি সফরে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায় অভিযুক্ত ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে হাসিমুখে হাত মেলানো নিয়ে বরিস বলেন, এর অর্থ এই নয় যে আমরা আমাদের নীতিতে অটল থাকতে পারি না। তিনি তেলের উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনাকে স্বাগত জানান। এছাড়াও ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করার কথা জানান।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, বরিস জনসন মানবাধিকারের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেই তার কাছে।
অন্যদিকে ব্রিটেনের লেবার পার্টির এক নেতা বলেন, এক স্বৈরশাসক থেকে অন্য স্বৈরশাসকের কাছে গিয়ে হাত মেলানো কোনো কৌশল নয়। তবে বরিসের যুক্তি, ইউক্রেনে পুতিনের হামলা মোকাবিলায় তাকে ‘সম্ভাব্য বিস্তৃত জোট’ গঠন করতে হবে।