মুফতি আতাউর রহমান:সৃষ্টিজগৎ পরিচালনা করতে মহান আল্লাহ অসংখ্য অগণিত ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন। প্রশ্ন হলো এত ফেরেশতা থাকে কোথায়? আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হলো, আসমান ফেরেশতাদের সাধারণ আবাস। সাধারণত ফেরেশতারা আসমানেই থাকে। কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করতে তারা আসমান ত্যাগ করে অন্যত্রও অবস্থান করে।
আল্লামা ইবনে হাজার আস্কালানি (রহ.) বলেন, ফেরেশতারা সূক্ষ্ম শরীরের অধিকারী। তাদের বিভিন্ন আকৃতি ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাদের বাসস্থান আসমানে। (ফাতহুল বারি : ৬/৩০৬)
অসংখ্য হাদিসের বর্ণনা থেকেও বোঝা যায়, আসমান ফেরেশতাদের সাধারণ আবাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ আমিন বলে, আর ফেরেশতারাও আকাশে আমিন বলেন, তখন যদি একটির সঙ্গে অপরটির মিল হয় তবে তার পূর্বের পাপ ক্ষমা করা হয়। ’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৯৩০)
তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন আসমানে কোনো নির্দেশ জারি করেন, ফেরেশতারা তাঁর নির্দেশের প্রতি বিনয় ও আনুগত্য প্রকাশের জন্য স্বীয় পাখাগুলো হেলাতে থাকেন। তাদের পাখা হেলানোর শব্দটি যেন পাথরের ওপর শিকলের ঝনঝনির ধ্বনি। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৮১)
ফেরেশতারা আসমানেই থাকে এবং সেখানেই তাদের দৈনন্দিন দায়িত্ব বণ্টিত হয়। অতঃপর সেখানেই তারা তা নিয়ে আলোচনা করে। আয়েশা (রা.) বলেন, তিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন যে ফেরেশতামণ্ডলী মেঘমালার আড়ালে অবতরণ করেন এবং আকাশের ফায়সালাগুলো আলোচনা করেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২১০)
তবে আসমানে ফেরেশতা অনর্থক কোনো সময় কাটায় না; বরং তারা সর্বক্ষণ আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মধ্যে থাকে। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘সাত আসমানের এমন কোনো স্থান নেই যেখানে ফেরেশতারা নেই। তারা সেখানে বিভিন্ন ধরনের ইবাদতে মগ্ন থাকে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সর্বক্ষণ কিয়াম অবস্থায় থাকে, কেউ কেউ সর্বদা রুকু অবস্থায় থাকে আবার কেউ কেউ সব সময় সিজদারত থাকে। এ ছাড়া তারা বহু রকম ইবাদতে মগ্ন থাকে। তাদের প্রকৃত অবস্থা মহান আল্লাহই ভালো জানেন। ’ (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া : ১/৯৬)
আল্লামা ইবনে হাজার আস্কালানি (রহ.) বলেন, ফেরেশতারা সূক্ষ্ম শরীরের অধিকারী। তাদের বিভিন্ন আকৃতি ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাদের বাসস্থান আসমানে। (ফাতহুল বারি : ৬/৩০৬)
আসমানে ফেরেশতাদের বাসস্থান কেমন—এমন প্রশ্নের উত্তরে আল্লামা সুয়ুতি (রহ.) বলেন, ‘আসমানগুলো ফেরেশতাদের বাসস্থান। তাদের বাসস্থানগুলো পৃথিবীর উত্তম ও নান্দনিক বাগানের তুল্য। ’ (আল-হাবায়িক ফি আখবারিল মালায়িক, পৃষ্ঠা ২১৩)