বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে । আর আওয়ামী লীগকে বাচাঁতে হলে দলের ত্যাগী নেতা কর্মীদের বাঁচাতে হবে, এতে দল টিকে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নীলিমা আক্তার লিলি । তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু শব্দটি একে অপরের সাথে পরিপূরক হলেও আওয়ামী লীগ শব্দটি না থাকলে যেন সেটি পূর্ণতা পায়না। বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ এই তিনটি শব্দ একে অপরের পরিপূরক । আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির ২৪ বছরের লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম । লাখো শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা এই দেশ পেয়েছি । ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে এই বাংলার স্বধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, তা আবার বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ফিরে পায় এই বাংলার মেহনতি মানুষ । ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মগ্রহণের পর থেকে নানা লড়াই, সংগ্রাম, চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দলটি টানা ৩ বার সহ মোট ৪র্থ বারের মত রাষ্ট্র ক্ষমতায়। ১৯৪৯ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেন প্যালেসে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়া, যার সভাপতি ছিলেন টাঙ্গাইলের মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক টাঙ্গাইলের শামসুল হক। পরবর্তীকালে, ১৯৫৫ সালে মওলানা ভাসানীর উদ্যোগে ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনটির নাম থেকে পরে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়; নাম রাখা হয়: ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’। তবে মুক্তিযুদ্ধের আগে সাধারণ মানুষ পূর্ব পাকিস্থান শব্দটি বাদ দিয়েই বলত ‘আওয়ামী লীগ’ যা পরবর্তীতে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামকরণ করা হয়। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার ইতিহাস জন্মলগ্ন থেকেই। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট-সরকার গঠন করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকদের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব ও শোষণের ফলস্বরূপ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ সংগ্রাম করে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩০টি আসনে জয় লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করেন । তবে স্বাধীনতার পর কালোশক্তির নানা নীলনকশায় স্বাধীনতা অর্জনে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী এই দলকে থাকতে হয়েছে ক্ষমতার বাইরে । তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি এই দেশের তৃণমূল মানুষের ভালোবাসা পাল্টে দিয়েছে ইতিহাসকে । বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকারের সাড়ে তিন বছর এবং ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৫ বছর, সর্বশেষ ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করছে । ২০০৮ সালের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত, আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর সুখী-সমৃদ্ধ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়াসহ বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে দলটি । ইতোমধ্যে ২১সালের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অনেকদূর এগিয়েছে দলটি। ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করে। ফলে দেশের জনগণ আবারো বিপুল ভোটে ক্ষমতায় আনে এই দলটিকে । মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী নীলিমা আক্তার লিলি আরও বলেন, জয়বাংলা, জয়বঙ্গবন্ধু শ্লোগানটা কোন দলের নয়, সারা বাংলাদেশের, সারা বাংলার মানুষের। এই শ্লোগান আমাদেরকে একযোগে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস দেয়। এই শ্লোগান চিরদিন অম্লান থাকবে । যারা আমাদের বাক স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার, আমাদের চিন্তা মননকে বন্দুক ঠেকিয়ে বন্ধ করে দিতে চায়, তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলতে চাই, পরিস্তিতি যখন যেটা বলে দেবে সেই হিসাবে মোকাবেলা করার জন্য আমাদের সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে ।
এদিকে আসছে আগামী ২৬শে নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মহিলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন আর এই সম্মেলনের মাধ্যমে আসবে মহিলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি । তাই মহিলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারীদের মধ্যে অন্যতম বর্তমান মহিলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নীলিমা আক্তার লিলি । অভিজ্ঞ ও সিনিয়র রাজনীতিক হিসেবে সর্বমহলে তার গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে । সেজন্য সাধারন সম্পাদক পদে তিনি বেশ এগিয়ে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে । সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অবদান রেখে চলছেন তিনি । নীলিমা আক্তার লিলি ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে যুক্ত । তিনি ১৯৮৯ সালে টঙ্গী সরকারী কলেজের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকার দায়িত্ব পালন করেছেন, ১৯৯১ সালে উক্ত কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত কক্ষ সমাপাদিকা, ১৯৯৩ সালে ছাত্রলীগ মনোনীত জি এস নির্বাচিত হন, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গাজীপুর জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন, গাজীপুর জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছে ।
এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন । তার স্বামী গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান জনাব কাজী ইলিয়াস আহম্মেদ ।তিনি বর্তমানে গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন ।