ঢাকা , শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরিসংখ্যানবিদ ও সাহিত্যিক কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকীতে কুমারখালীতে আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা প্রতিযোগিতা শুরু

নাহিদুজ্জামান শয়ন, স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশের বিশিষ্ট পরিসংখ্যানবিদ, সাহিত্যিক ও দাবাড়ু কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রথমবারের মতো গ্রামে আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড রেটিং দাবা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

দুই দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে কাজী মোতাহার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশন, যার উদ্দেশ্য গ্রামীণ পর্যায়ে দাবা খেলার প্রচলন বৃদ্ধি, মাদক ও স্মার্টফোন অপব্যবহার রোধ এবং কাজী মোতাহার হোসেনের স্মৃতি ধরে রাখা।

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় কেক কেটে ও আলোচনা সভার মাধ্যমে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোহন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রথমবারের মতো গ্রামীণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতায় ভারতের চারজনসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল—ঢাকা, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৫৪ জন নানাবয়সী দাবাড়ু অংশ নিচ্ছেন।

দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, একটি কক্ষে ২৭টি দাবা বোর্ডে দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ খেলা চলছে। খেলাটি দেখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের স্বজনরাও ভিড় করেছেন।

রাজশাহী থেকে আসা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এস এম ফারাবী রহমান বলেন,
“ঢাকা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে খেলেছি। এখানে বড়দের সঙ্গে খেলতে কিছুটা ভয় লাগছে। তবুও জয়ের প্রত্যাশায় খেলছি। ভবিষ্যতে গ্র্যান্ডমাস্টার বা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।”

ফারাবীর মা শিল্পী খাতুন জানান, “ফারাবী এখানে সবচেয়ে ছোট খেলোয়াড়। না পারলেও ভালো অভিজ্ঞতা হবে, সেই কারণেই তাকে নিয়ে এসেছি।”

কোলকাতা থেকে আগত দাবাড়ু শুভংকর মৈত্রী বলেন,
“এটি ঢাকার বাইরে আমার প্রথম প্রতিযোগিতা। আয়োজন ও পরিবেশ দুটোই চমৎকার।”

বাংলাদেশ এসএবির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম বলেন,
“দাবা খেলায় খরচ কম, তবে এটি বুদ্ধিবিকাশে সহায়ক। দাবা মানুষকে ধৈর্যশীল, সহনশীল ও ভদ্র হতে সাহায্য করে।”

ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোহন জানান,
“প্রথমবারের মতো গ্রামে আন্তর্জাতিক মানের দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আগামীকাল (শনিবার) বিকেল ৫টায় পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা শেষ হবে।”

উল্লেখ্য, কাজী মোতাহার হোসেন ১৮৯৭ সালের ৩০ জুলাই তৎকালীন নদীয়া জেলার কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চৌরঙ্গী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮১ সালের ৯ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ১১:৫৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫
৫৩৫ Time View

পরিসংখ্যানবিদ ও সাহিত্যিক কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকীতে কুমারখালীতে আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা প্রতিযোগিতা শুরু

আপডেটের সময় : ১১:৫৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের বিশিষ্ট পরিসংখ্যানবিদ, সাহিত্যিক ও দাবাড়ু কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রথমবারের মতো গ্রামে আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড রেটিং দাবা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

দুই দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে কাজী মোতাহার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশন, যার উদ্দেশ্য গ্রামীণ পর্যায়ে দাবা খেলার প্রচলন বৃদ্ধি, মাদক ও স্মার্টফোন অপব্যবহার রোধ এবং কাজী মোতাহার হোসেনের স্মৃতি ধরে রাখা।

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় কেক কেটে ও আলোচনা সভার মাধ্যমে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোহন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রথমবারের মতো গ্রামীণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতায় ভারতের চারজনসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল—ঢাকা, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৫৪ জন নানাবয়সী দাবাড়ু অংশ নিচ্ছেন।

দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, একটি কক্ষে ২৭টি দাবা বোর্ডে দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ খেলা চলছে। খেলাটি দেখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের স্বজনরাও ভিড় করেছেন।

রাজশাহী থেকে আসা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এস এম ফারাবী রহমান বলেন,
“ঢাকা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে খেলেছি। এখানে বড়দের সঙ্গে খেলতে কিছুটা ভয় লাগছে। তবুও জয়ের প্রত্যাশায় খেলছি। ভবিষ্যতে গ্র্যান্ডমাস্টার বা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।”

ফারাবীর মা শিল্পী খাতুন জানান, “ফারাবী এখানে সবচেয়ে ছোট খেলোয়াড়। না পারলেও ভালো অভিজ্ঞতা হবে, সেই কারণেই তাকে নিয়ে এসেছি।”

কোলকাতা থেকে আগত দাবাড়ু শুভংকর মৈত্রী বলেন,
“এটি ঢাকার বাইরে আমার প্রথম প্রতিযোগিতা। আয়োজন ও পরিবেশ দুটোই চমৎকার।”

বাংলাদেশ এসএবির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম বলেন,
“দাবা খেলায় খরচ কম, তবে এটি বুদ্ধিবিকাশে সহায়ক। দাবা মানুষকে ধৈর্যশীল, সহনশীল ও ভদ্র হতে সাহায্য করে।”

ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোহন জানান,
“প্রথমবারের মতো গ্রামে আন্তর্জাতিক মানের দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আগামীকাল (শনিবার) বিকেল ৫টায় পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা শেষ হবে।”

উল্লেখ্য, কাজী মোতাহার হোসেন ১৮৯৭ সালের ৩০ জুলাই তৎকালীন নদীয়া জেলার কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চৌরঙ্গী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮১ সালের ৯ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।