ডাক পাচ্ছে বাংলাদেশও:
‘গ্লোবাল সাউথের’ ১২০টিরও বেশি দেশ নিয়ে আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিশেষ ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারত। গতকাল শুক্রবার নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন কাত্রা এ কথা জানান। উল্লেখ্য, ‘গ্লোবাল সাউথ’ শব্দগুচ্ছের মাধ্যমে বিশ্বের দক্ষিণ ভাগের দেশগুলোকে বোঝায়।
কোন কোন দেশকে ভারত আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে কি না—এসব প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেছেন, কারা অংশ নিচ্ছেন তা সম্মেলনের আগেই জানানো হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, বাংলাদেশ এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাচ্ছে।
কভিড মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের পটভূমিতে বিশ্বে চলমান বিভিন্ন সংকট নিয়ে এই সম্মেলনে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ও সমাপনী অধিবেশনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদের স্বাগত জানাবেন। সম্মেলনে ১০টি অধিবেশনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার চারটি অধিবেশন এবং পরদিন শুক্রবার ছয়টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি অধিবেশনে ১০ থেকে ২০টি দেশের নেতা ও মন্ত্রী অংশ নিতে পারেন।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হলো ‘মানবকেন্দ্রিক উন্নয়নের জন্য গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর’। সমাপনী নেতাদের অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হলো ‘উদ্দেশ্যের ঐক্য, কণ্ঠস্বরের ঐক্য।’,
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সবাইকে নিয়ে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াসের’ (একসঙ্গে চলা, একসঙ্গে বিকশিত হওয়া, একসঙ্গে বিশ্বাস করা এবং একসঙ্গে প্রয়াস চালানো) নীতি এবং ভারতের ‘বাসুধৈব কুটুম্বকম’ (মানবজাতি এক পরিবারের বোঝাতে) দর্শন থেকে এ সপ্তাহে ‘গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর’ শীর্ষক সম্মেলন আয়োজন করছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সম্মেলনে আটটি মন্ত্রিপর্যায়ের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হলো জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়নে অর্থায়ন বিষয়ে অর্থমন্ত্রীদের অধিবেশন, পরিবেশবান্ধব জীবন যাপনের বিষয়ে পরিবেশমন্ত্রীদের অধিবেশন, গ্লোবাল সাউথের অগ্রাধিকার—একটি অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অধিবেশন, ‘জ্বালানি নিরাপত্তা ও উন্নয়ন-সমৃদ্ধির রোডম্যাপ’ নিয়ে জ্বালানিমন্ত্রীদের অধিবেশন, ‘স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্যসেবাব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহযোগিতা’ বিষয়ক স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের অধিবেশন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিবিষয়ক শিক্ষামন্ত্রীদের অধিবেশন, ‘গ্লোবাল সাউথ—বাণিজ্য, প্রযুক্তি, পর্যটন এবং সম্পদে উন্নয়নশীল সমন্বয়’ বিষয়ক বাণিজ্য ও বাণিজ্যমন্ত্রীদের অধিবেশন এবং ‘জি-২০ : ভারতের সভাপতিত্বের জন্য প্রস্তাবনা’ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অধিবেশন।
উল্লেখ্য, এ বছর ভারত জি-২০-এর সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছে। ভারত আগেই ঘোষণা দিয়েছে, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে তারা বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশকে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানাবে। এ ছাড়া ভারত বছরব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘গ্লোবাল সাউথ শীর্ষ সম্মেলনের কণ্ঠস্বর’-এর অংশীদার দেশগুলোর মূল্যবান মতামত বিশ্বব্যাপী যেন কাজে লাগে, তা নিশ্চিত করতে ভারত কাজ করবে। এ ছাড়া জি-২০-তে ভারতের সভাপতিত্ব এসব দেশের জন্য একটি বিশেষ ও শক্তিশালী সুযোগ তৈরি হবে। যারা জি-২০ প্রক্রিয়ার অংশ নয়, তারাও জি-২০ থেকে তাদের প্রত্যাশাগুলো তুলে ধরার সুযোগ নিতে পারবে।