আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর,ময়মনসিংহঃময়মনসিংহের নান্দাইলের পৃথক দুটি হত্যা মামলার রহস্য গত দুই দিনে উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।
গত দু’বছরেরও অধিক সময় ধরে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অল্প সময়ে গ্রেফতার ও রহস্য উদঘাটন চুরি, ডাকাতি’ছিনতাই,মাদক’ জুয়া নির্মূলসহ আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় জেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে বার বার প্রশংসিত হচ্ছে।
৩০ মার্চ বুধবার দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) খন্দকার ফজলে রাব্বী জানান ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় নিজ ঘরে সাজিদ (১৫) নামে এক কিশোরকে গলা কেটে হত্যার দুই দিনের মাথায় এর রহস্য উদঘাটন সহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের হান্নান (৪৫) ও তার মামাতো ভাই ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আরমান (১৯)।
খুনি হান্নান তার স্ত্রী রুনা বেগমকে পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে চাকরি পাইয়ে দেন। সেই কারখানায় রুনার সঙ্গে কাজ করতো হত্যাকাণ্ডের শিকার সাজিদের বড় ভাই রবিউল আওয়াল শুভ (১৮)। একই কারখানায় কাজের সুবাদে শুভও একই এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। এক পর্যায়ে শুভর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে রুনা বেগমের।যার প্রেক্ষিতে ৫ মাস আগে সন্তানদের স্বামীর ঘরে ফেলে রেখে শুভর সাথে চলে গিয়ে নতুন সংসার বাধে রুনা।
২০ বছরের সংসার জীবনের অনাকাঙ্খিত ভাঙ্গনের পর প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠে হান্নান। সেই আক্রোশ থেকেই শুভ বা তার পরিবারের কাউকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে সে।পরিকল্পনা মোতাবেক হান্নান তার মামাতো ভাই আসামি আরমানকে সঙ্গে নিয়ে নান্দাইল আসে। গত ২৭ মার্চ রোববার ভোরে একটি ধারাল ছুরি নিয়ে সাজিদের ঘরে ঢুকে তাকে গলা কেটে হত্যা করে হান্নান ও আরমান। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান,ঘটনার পরদিন সোমবার নিহতের মা ইয়াসমিন আক্তার (৩৭) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়েই হত্যার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত দুইজনকে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় ডিবি পুলিশ।
পরে আসামিদের দেওয়া তথ্য মতে ঘটনার কিছুটা দূরে একটি পুকুর পাড় থেকে তাদের পরিহিত রক্তমাখা জামা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরিটি উদ্ধার করা হয়। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান ডিবির ওসি।
আনোয়ার সাদত