ওয়ানডের পর এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করলো বাংলাদেশ। সোমবার (২৭ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।
এ ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিলো নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান করার। কিন্তু বৃষ্টিতে পন্ড হয় সে সুযোগ। ডিএলএস মেথডে আইরিশদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় আট ওভারে ১০৪ রানের। সেই লক্ষ্য তাড়ায় ৫ উইকেটে ৮১ রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস।
রান তাড়ায় নেমে নাসুম আহমেদ আর মোস্তাফিজুর রহমানের প্রথম দুই ওভারে ৩২ রান তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশ পড়ে গিয়েছিলো ভীষণ চাপে। তৃতীয় ওভারে হাসান মাহমুদের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ২৩ বছর বয়সী পেসার আরো একবার দেখিয়েছেন, তার ক্রিকেট মস্তিষ্ক এখনই কতোটা পরিণত।
প্রথম তিন বলে স্লোয়ার আর বৈচিত্র্যে আইরিশ ব্যাটার রস অ্যাডায়ারকে পরাস্ত করেন। টানা তিন ডটের পর চতুর্থ বলে করে দেন বোল্ড। ৩২ রানে প্রথম উইকেট হারায় আইরিশরা। ওই ওভারে হাসান মাহমুদ দেন ৫ রান।
চতুর্থ ওভারে তাসকিন ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে বাংলাদেশকে ভালোভাবে ফেরান। অধিনায়ক স্টারলিংসহ দুই ব্যাটারকে বোল্ড, একজনকে ক্যাচ বানান ডানহাতি এই পেসার।
পঞ্চম ওভারে হাসান মাহমুদকে ৩ বাউন্ডারিসহ ১৬ রান তুলে নিয়ে ফের উত্তেজনা তৈরি করে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে সাকিব করেন দুর্দান্ত বোলিং। চার ডট দিয়ে ওভারে মাত্র ৫ রান খরচ করেন টাইগার অধিনায়ক।
এরপর আর আইরিশরা রান তাড়ায় ছুটতে পারেনি। ৫ উইকেটে ৮১ রানেই থামতে হয় তাদের। তাসকিন ২ ওভারে ১৬ রান খরচায় একাই নেন ৪টি উইকেট।
এর আগে ১৯.২ ওভারে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ২০৭ রান তোলার পরই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এটি টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার যে সুবিধা, সেটা শুরুতে আদায় করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। বরং, উল্টো বাংলাদেশের দুই ওপেনারই চেপে বসেছিলো আইরিশ বোলারদের ওপর। দুই ওপেনার মিলে ৭.১ ওভারে গড়ে ফেলে ৯১ রানের বিধ্বংসী এক জুটি। মাত্র ২৩ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন লিটন।
তবে উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়ার পর নিজের হাফসেঞ্চুরিটা পূরণ করতে পারেননি লিটন। আউট হয়ে যান ৩ রান দূরে থাকতে। ক্রেইগ ইয়ংয়ের করা ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলে পল স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
লিটন দাস আর রনি তালুকদারের উড়ন্ত সূচনার পর মাঠে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তও ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করেন। ১৩ বলে ১৪ রান করে উইকেটে সেট হওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু হ্যারি টেক্টরের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন শান্ত। ১১৮ রানের মাথায় পড়ে দ্বিতীয় উইকেট।
তবে লিটন আর শান্ত আউট হয়ে গেলেও রনি তালুকদারের বিধ্বংসী ব্যাটিং অব্যাহত ছিলো। মাত্র ২৪ বলেই হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৬৭ রানে আউট হয়ে যান ডানহাতি এই ব্যাটার। তার ঝোড়ো ইনিংসে ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছিলো ৩টি ছক্কার মার।
শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে ব্যাট করতে পাঠানো হয় চার নম্বরে। ২০ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ৩০ রান করে আউট হন তিনি। তাওহিদ হৃদয় ৮ বলে এক ছক্কায় করেন ১৩। এরপর সাকিব আল হাসান ১৩ বলে ২০ রানে এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ১ বলে ৪ রান করার পরই বৃষ্টি নামে।