টেলিভিশন শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ ‘লিগ্যাল উইংস অ্যান্ড ডায়ালগ’ নামে একটি টিম গঠন করেছে। এটি তাদের আইনি সহায়তা দেবে বলে জানায় সংঘ। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সংগঠনের কার্যালয়ে টিমের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা হলেন—অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, ব্যারিস্টার রাবেয়া জাহান ফিরোজ এবং অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল।
সম্প্রতি অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভার নামে আইনি নোটিশ আসার পর এমন উদ্যোগ নেওয়া হলো।
অনুষ্ঠানে বিস্তারিত কথা বলেন এ অভিনেত্রী। ফলে দীর্ঘ এক যুগ পর গণমাধ্যমের সঙ্গে খোলামেলা কথা বললেন প্রভা। বক্তব্যের শুরুটা করলেন এভাবে—“আমি গ্রেটফুল অ্যাসোসিয়েশনের কাছে। ছোটবেলায় পড়ে গিয়ে ব্যথা পেলে ভয় পেতাম, কারণ আম্মু জানলে বকা দেবে। এখন ফিজিক্যালি অ্যাবিউজড হলেও হজম করে ফেলি, কারণ তার চেয়ে বড় ভয় হয় যদি জার্নালিস্ট জানতে পারে—তাহলে কী হবে!’
মূলত তার বাগদত্তার সঙ্গে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন এ অভিনেত্রী। ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ঝড়-ঝাপ্টার সম্মুখীন হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে প্রেম কিংবা বিয়ে নিয়ে একাধিকবার সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তবে এসবের জন্য তিনি পরোক্ষভাবে দুষলেন গণমাধ্যমকে।
তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে যারা (প্রেমিক) এসেছে, প্রত্যেকে যাওয়ার সময় একটা ব্লেম গেম খেলেছে। এটার মধ্যে মেন্টালি টর্চার হয়েছি, কিন্তু কাউকে কিছু মুখ ফুটে বলতে পারিনি। বরাবরই মনে হয়েছে, বললেই যদি জার্নালিস্ট জেনে যায়? ডিভোর্সের পেপার যখন ফাইল করি, নিয়ম অনুযায়ী আমার কিছু পাওনা থাকে। কিন্তু সেটা নিয়ে কথা বলতে ভয় করে, যদি সেটা খবরে চলে আসে। আমি সবকিছুই করতে পারতাম, সাংবাদিকরা যদি আমাকে সাপোর্ট করতেন।’
আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি জানিয়েছি, আপনারা আমার সঙ্গে কথা না বলে নিউজ করবেন না। আমরাও তো চেষ্টা করি ধর্মীয় রীতি পালন করতে। যেমন রোজার সময় আমাদের মন নরম থাকে। সেই সময় প্রত্যেকেরই উচিত কারও মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা চাওয়া। আমি এটা নিয়ে গুছিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিই ক্ষমা চেয়ে। এর পরই আমার কানে আসে নিউজ হয়ে গেছে—অবশেষে সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রভা। আমি কেন ক্ষমা চাইতে যাব? ক্ষমা তো এ সোসাইটির আমার কাছে চাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে তার বিগত অভিজ্ঞতা সুখকর নয় বলে উদাহরণ হিসেবে দুটি ঘটনা বলেন। তার ভাষ্য, ‘‘একটা মেকআপ রুম। যেখানে আমরা শুটিং করে রুমে ঢুকি। মেকআপ করি। আপনারা (সাংবাদিক) এলে বসে গল্প করি। তো এভাবে একদিন গ্রিনরুমে বসে আছি। একজন ফটোগ্রাফার ও একজন সাংবাদিক এলো। বসতে বললাম। এরপর আমি মুখে পাউডার মেখে মেকআপের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর মধ্যে ক্লিক ক্লিক ক্লিক। আমি বললাম, ‘কেন ছবি তুলতেছেন?’ বলে, ‘আমি তো জার্নালিস্ট।’ এটার মানে কী বলেন তো? উনি সাংবাদিক বলে আমার কোনো প্রাইভেসি নাই?
নাম্বার টু। সেদিন শুটিং শেষ করে উবার নিয়েছি। একজন সাংবাদিকও আমার সঙ্গে উঠলেন। সিটে বসে কথা বলতে বলতে সে আমার পায়ে হাত রাখল! আমি জানি, সে সরি বললেও তার ভুল রিয়ালাইজ করে নাই। আমি বোন হিসেবে তুলনা করলে কি খুব সমস্যা হয়? আমাকে প্রটেস্ট করবেন, বোনকে নিয়ে বাজে কথা অ্যালাউ করব না। বান্ধবীর বাসায় মুরগি কেটে দিয়েছি, মসলাও করে দিয়েছি। এটা কি করার মতো নিউজ? একজন বলল তুমি তো ইনস্টাগ্রামে অ্যাটেনশন চাও, সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার প্রোফাইল পিকচার সরিয়ে দিলাম, ফলো করা বন্ধ করে দিলাম।’’
সবশেষ নিজের বর্তমান নিয়ে বেশ ভালো আছেন বলেও জানান ‘সিক্সটি নাইন’, দৈনিক তোলপাড়-খ্যাত এ তারকা। ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমার বাবা-মা শিক্ষিত। আমি খুব সুন্দর একটা পরিবার পেয়েছি। তারা আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছে। আমি চাই ভবিষ্যতে সাংবাদিকরাও আরও সমর্থন দেবেন।”