লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী মো. লিটনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৬ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন।
জেলা জজ আদালতের কৌশুলী (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত লিটন আদালতে তার স্ত্রী রুবিনা আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত লিটনের ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন। রায় প্রদানের সময় আসামী লিটন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মো. লিটন (২৯) জেলার কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের উত্তর চাকাদিরা গ্রামের মৃত মোছলেহ উদ্দিনের ছেলে। নিহত রুবিনা (১৭) একই এলাকার চৌধুরী মাঝির মেয়ে। হত্যার ঘটনার প্রায় ছয় মাস আগে ফুফাতো ভাই ইটভাটা শ্রমিক লিটনের সাথে তার পরিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল বিকেলে কমলনগর থানা পুলিশ গৃহবধূ রুবিনা আক্তারের মৃতদেহ তার স্বামী লিটনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। রুবিনা গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে পরিবারের লোকজন প্রচার করে। পুলিশ মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওই সময় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। ময়নাতদন্তে রুবিনার মাথায় আঘাত করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন আসে। এর ভিত্তিতে ওই বছরের ৮ জুলাই কমলনগর থানা পুলিশের পিএসআই মো. মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে রুবিনার স্বামী মো. লিটনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরদিন তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে লিটন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।
৯ জুলাই লিটন আদালতের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এতে সে স্বীকার করে, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রীর সাথে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে একটি আমের ডাল দিয়ে তার স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে। সে মারা গেছে ভেবে তার গলায় দড়ি পেঁছিয়ে আম গাছের ডালের সাথে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান তিনি।
একই বছরের ৩১ আগষ্ট কমলনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অনিমেষ মন্ডল রুবিনার স্বামী লিটনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। এ মামলায় ১২ জন স্বাক্ষী আদালতে স্বাক্ষী প্রদান করে।