শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার সদ্য বদলি হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়। আদেশটি সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পৌঁছায়।
ওসি মোস্তাফিজকে চট্টগ্রাম ও পরিদর্শক সুরুজকে বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শরীয়তপুরের নাওডোবা এলাকার দুই ব্যবসায়ী সাদ্দাম চোকদার ও বকুল চোকদারকে ছিনতাই মামলায় থানায় নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে ৭২ লাখ টাকার চেক নেওয়ার অভিযোগে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া একই ঘটনায় ৯ জুলাইয়ের মধ্যে ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে’ নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে পুলিশ সুপারকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল হক মোবাইল ফোনে বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের শরীয়তপুর থেকে অন্যত্র সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মে দ্রুত বিচার আইনে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় একটি ছিনতাই মামলা করেন শাহিন আলম। ওই মামলায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা আহম্মেদ চোকদার কান্দি এলাকার সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদারসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় ২৯ মে তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হন।
জামিনে বের হয়ে আসার পর ৩০ মে রাতে সাদ্দাম, বকুল, সাইদুল শেখ ও আনোয়ারকে নিয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জে সাদ্দামের বন্ধু আলমগীর চোকদার বাসায় যান। ওইদিন রাতে তথ্য পেয়ে সেই বাসায় হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারীসহ ১০/১২ জন। সাদ্দাম তাদের জামিনের কাগজ দেখানো মাত্র ছিঁড়ে ফেলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল। পরে সাদ্দাম ও বকুলকে লাথি, কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড়, লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ উপড়ে ফেলা হয়। এমন নির্যাতন চলে রাত ১টা থেকে পরের দিন ৩১ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত।
পরে তার আত্মীয় স্বজনরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসির কাছে পাঁচটি চেকে ৭২ লাখ টাকা দিলে নির্যাতন থেকে মুক্তি পান তারা।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুন এ নির্যাতনের ঘটনায় সাদ্দাম, বকুল ও তাদের বড় ভাই আবু জাফর ঠান্ডু জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেন।