গত কয়েকদিনের ব্যবধানে ফের বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। আর মাছের দাম তো আগে থেকেই চড়া, আজকের বাজারেও তার ব্যতিক্রম নয়। সব মিলিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মাছ, সবজি সবই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে ক্রেতারা বাজারে এসে পড়ছেন অস্বস্তিতে।
অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, গত তিন চারদিনে সবজির দাম আরেক দফা বেড়েছে। এর আগে দাম কিছুটা কম যাচ্ছিলো। পাইকারি বাজারেই সবকিছুর দাম বেশি, যারা প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
শুক্রবার (২৩ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে কাঁচা পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০, ঝিঙা ৭০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধন্দুল ৭০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি মানভেদে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৮০ টাকা, গুঁড়ি কচু প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, দেশি আলু (লাল) প্রতি কেজি ৬০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাংস। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা, ব্রয়লার প্রতি কেজি ২০০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা এবং লাল লেয়ার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
এছাড়া বাজারে কয়েক মাস ধরে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। বিক্রেতাদের ভাষ্যমতে, মাছের খাবারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। এছাড়া শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মাছের চাহিদা থাকায়ও মাছের বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাঙাশ মাছ সাইজ ভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ টাকা, রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, ছোট গুড়া মাছ (কাচকি) প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা, বড় চিংড়ি ৭০০ টাকা, বড় কাতল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, সিলভার কার্ভ (ছোট) প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহাখালী বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আজাহার মোল্লা। তিনি বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। কোনো সবজির দাম জিজ্ঞেস করলেই অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। এত দাম দিয়ে সবজি কেনা সম্ভব? গত সপ্তাহে তবুও সবজির দাম কম ছিল, আজ বাজারে এসে দেখছি দাম বেড়ে গেছে। দাম বাড়ায় এক কেজির জায়গায় আধাকেজি কিনতে হচ্ছে।
গার্মেন্টস কর্মী সজিবুর রহমান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, বাড়তির দামের কারণে ভালো কোনো মাছ আমাদের মতো নিম্নআয়ের লোকজনরা কিনতে পারছে না। পাঙাশ, তেলাপিয়া, চাষের কই সাধারণত বেশি কেনা হয়। আজকের বাজারে দেখা যাচ্ছে এগুলোর দামও বেড়ে গেছে।
বাজারে মাছের দাম এত বাড়তি কেন- এ বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারের মাছ বিক্রেতা নাছির উদ্দিন বলেন, প্রতিটি আড়ত, পাইকারি বাজারেই মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। আমাদের বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। যার কারণে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর শুক্রবারে এমনিতেই মাছের চাহিদা বেশি থাকে, সে কারণেও দাম বাড়ে।
কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে এনে খুচরা বাজারে সবজি বিক্রি করেন শরিফ আহমেদ। তিনি বলেন, গত ৩/৪ দিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। এর মূল কারণ হলো অনেক সবজির মৌসুম শেষ, নতুন করে সবজি ওঠার আগ পর্যন্ত এমন বাড়তি দাম থাকতে পারে। এছাড়া দূরদূরান্ত থেকে এখন সবজির ট্রাক কম আসছে, সব ট্রাক, পিকআপে এখন কোরবানির গরু আনা নেওয়া নিয়ে ব্যস্ত। তাই সবজির বাজার এটা ঈদের পর পর্যন্ত এমন বাড়তি থাকতে পারে।