দক্ষিণ কোরিয়ায় একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক বাংলাদেশি নারী। জন্ম নেয়া সন্তানদের মধ্যে দুজন ছেলে আর দুজন মেয়ে। এখন পর্যন্ত তাদের নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের বরাত দিয়ে এ ঘটনা কোরিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দেশটির উইজংবু সংমু হাসপাতালে চার সন্তানের জন্ম হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশি ওই নারীর অস্ত্রোপচার করেছেন প্রসূতি ও গাইনোকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কিম হিয়ন-হি। তিনি জানান, চার সন্তান বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (নবজাতকের) চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো শঙ্কা নেই। চার শিশু ভালো আছে। শিশুদের এক মাস পর বাসায় নিয়ে যেতে পারবে বলেও জানান ডাক্তাররা।
হাসপাতালের পরিচালক হান চ্যাং-হি জানায়, এক মিনিট পরপর জন্ম নেওয়া প্রথম শিশুটির ওজন ছিল ১.৮ কেজি, দ্বিতীয়জন ১.৫, তৃতীয় এবং চতুর্থজন ১.৬ কেজি। এখন পর্যন্ত প্রথমজনের ওজন আগের মতোই আছে, বাকিদের ১০০ গ্রাম কম আছে।
অপারেশনের দিন তথা জন্মের দিন প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ, শিশুরোগ, এনেস্থেশিয়া ও ব্যথার, অপারেটিং রুম, নবজাতক কক্ষ এবং ডেলিভারি রুম থেকে প্রায় মোট ৩০ জন মেডিকেল স্টাফ সন্তান প্রসবের সময় একত্রে কাজ করেছিলেন বলে তিনি জানান।
অভিভাবককে অভিনন্দন জানিয়ে নবজাতক যেন সুস্থ থাকে, সে জন্য প্রার্থনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নবজাতক চার সন্তানের পিতা প্রবাসী আব্দুল জালিল এই প্রতিবেদককে বলেন, ২০১৩ সালে আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। দীর্ঘ নয় বছর কোনো সন্তান না হওয়ায় খুবই হতাশায় ছিলাম। এভাবে যে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম হবে, ভাবতে পারিনি। এখন আল্লাহ আমার ঘরে চার চারটি নক্ষত্র দান করেছেন। আমি অনেক খুশি। আমার ঘর এখন আলোকিত।
গত বছর সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে এক কোরীয় দম্পতির পাঁচ সন্তান জন্মের সর্বোচ্চ রেকর্ড আছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। তবে বিদেশিদের মধ্যে কোরিয়ায় একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম এটিই প্রথম। কোরিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ প্রবাসীরা তাদের অভিনন্দন জানান।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ইছাদীঘি গ্রামের মৃত রেজাউল করিমের সন্তান আব্দুল জলিল। ২০১২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পা রাখেন এই প্রবাসী। জলিল-আঁখি দম্পতি ২০১৩ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এখন এফ-২-৭ ভিসায় কোরিয়ায় পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। এক সাথে চার সন্তান জন্ম নেয়া তার এই খুশিতে ভাসছেন তার আত্মীয়স্বজন, পরিবার-পরিজনও।সূত্র-প্রবাস জার্নাল