জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ৬ ঘণ্টা পর নীলক্ষেত মোড় থেকে অবস্থান সরিয়ে নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৭ টার দিকে তারা নীলক্ষেত মোড় ছেড়ে যান। এর আগে দুপুর পৌনে ১ টার দিকে সিজিপিএর শর্ত শিথিল করে মানোন্নয়ন পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের এক দফা দাবিতে নীলক্ষেত অবরোধ করেছিলো তারা।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে আজিমপুর থেকে সাইন্সল্যাবমুখী রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। অবরোধ শুরুর পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির মধ্যেও অবস্থানে অনড় ছিলেন।
আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদের বিষয়টি সমাধান করতে বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাতে সম্মত না হয়ে অবরোধ চালিয়ে যান। পরে বিকাল সোয়া পাঁচটায় সাত কলেজের সমন্বয়ক ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন।
ঢাকা কলেজের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক খাইরুল হোসেন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের এ দাবি এখন মানা সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালায় দুইয়ের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হলে তাকে প্রমোশন দেয়ার নিয়ম নেই। আর সাত কলেজ যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকভুক্ত, তাই এই নিয়মের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়েরও কোনো চিন্তা নেই আপাতত নিয়ম পরিবর্তন করার।
তবে শিক্ষক প্রতিনিধি দল বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করার পরও শিক্ষার্থীরা অবরোধ থেকে সরতে রাজি হননি। পরে সন্ধ্যায় জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তারা অবরোধ স্থগিত করেন এবং আগামীকাল আবারও অবস্থান নেয়ার কথা জানান।
আন্দোলনকারীদের সমন্বয়কদের একজন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ওসমান গনি বলেন, জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আমরা আপাতত আজকে চলে যাচ্ছি। শুনেছি, আমাদের দাবির বিষয়ে শিক্ষকরা মিটিং করছেন। আগামীকালের মধ্যে আমাদের দাবি না মানা হলে আমরা আবারো রাস্তায় নামব। মানোন্নয়নের মাধ্যমে প্রমোশনের সুযোগ দিতে আমরা তিন মাস ধরে আন্দোলন করছি।
আমাদের আশ্বাস দিয়ে ঘোরানো হয়েছে, কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এর মধ্যে বিলম্বে ফল প্রকাশ করেছে। আমরা ইতিমধ্যে পরবর্তী বর্ষের প্রস্তুতি নিয়েছি এবং ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। অনেকের ফল খারাপ হয়েছে। অর্থাৎ প্রমোশনের জন্য নির্ধারিত সিজিপিএ–২ পাননি। তাই আমরা নির্ধারিত সিজিপিএর শর্ত শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন চাই।