বিএনপির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা কেন দেয় না সেই প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশটি ঘোষণা করেছে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে যারা বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। বিএনপিকে কেন দেয় না?
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি।
একই দিন রাজধানী এক দফা দাবি রাজধানীতে কালো পতাকা ও গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। তাদের পাল্টা হিসাবে আওয়ামী লীগ এ শান্তি সমাবেশ করে।
শুক্রবার বৃষ্টিমুখর দিনে জুমার নামাজের পরে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে শান্তি সমাবেশে আসেন। তবে জমায়েত শুধু বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতেই সীমাবদ্ধ ছিল।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, বিএনপি বসে বসে স্বপ্ন দেখে, নিষেধাজ্ঞার আতঙ্ক ছড়ায়। ভিসা নীতির আতঙ্ক ছড়ায়। বিএনপি রাস্তা বন্ধ করে ঢাকার প্রবেশপথে (২৯ জুলাই) অবস্থান করেছে, এর জন্য তো ভিসানীতি হওয়া দরকার, নিষেধাজ্ঞা আসা দরকার।
ঢাকার প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই অবস্থানে আমান উল্লাাহ আমান ফলের রস করে বুদ হয়ে গেছে। সেই অবস্থানের পরিণতি গয়েশ্বর. . পুলিশ অফিসার হারুন নাকি কিশোরগঞ্জ থেকে কোরাল মাছ এনেছে, কোরাল মাছের ঝোল খেতে খেতে গয়েশ্বর দিশেহারা।
তিনি বলেন, আন্দোলনের ১২টা বেজে গেছে। অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে এসেছিল তারাও ধান ক্ষেত, এখান দিয়ে, ওখান দিয়ে পালিয়ে যার যার বাড়ি ঘরে চলে গেছে। এই মানুষগুলো আর আসবে ঢাকায়?
বিএনপির কালো পতাকা মিছিল ও গণমিছিলের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা দেখে আমি ভাবলাম তাদের আবার কে মারা গেল? তাহলে কালো পতাকা কেন? কালো পতাকা মিছিল করে কেন? কেউ মারা গেছে? কালো পতাকা মিছিল মানেই হলো শোকের মিছিল। বিএনপি শোক করছে কেন? আন্দোলনের ১২টা বেজে গেছে। এখন নেতারা নিজেদের অজান্তে শোকের মিছিল করছে। আমরা আগস্ট মাসে কালো পতাকা ব্যবহার করি। আন্দোলনের পতাকা হচ্ছে লাল।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পুরানো বাণিজ্য মেলা মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশের কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে মিছিলে জনগণ নাই, সেই মিছিল গণমিছিল হয় কেমন করে? মিছিল দেখবেন? মিছিল দেখাব। একপ্রান্ত ঢাকার যাত্রাবাড়ী, আরেক প্রান্ত… এদিকে মিরপুর, ওইদিকে সবুজবাগ। আওয়ামী লীগের মিছিল মানে সারা শহরে ঢল নামে। দেখবেন ২ তারিখে (২ সেপ্টেম্বর), দেখবেন ১ তারিখে তারুণ্যের সমাবেশ। ওই দিন লাখো তরুণের হাতে আমরা দেখাব বিজয়ের পতাকা হাতে, শোকের কালো পতাকা নয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা আমাদের বোঝা হয়ে আছে। জাতিসংঘ আগে মাথাপিছু ১২ ডলার দিত এখন সাহায্য কমে ৮ ডলার দেয়। কীভাবে চলবে? কেউ সাহায্য করে না, শুধু মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলে, রোহিঙ্গাদের জন্য মায়াকান্না কাঁদে। তারা তাদের দেশে অন্য দেশের মাইগ্রেট জায়গা দিতে পারে, কিন্তু রোহিঙ্গাদের জায়গা হয় না।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে দেশের বড় সমদ্র সৈকত এবং সেখানকার জীবন বিপন্ন, অর্থনীতি ও পর্যটন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মুখে সুন্দর সুন্দর বাণী উচ্চারণ করে, আমাদের নেত্রীর (শেখ হাসিনা) প্রশংসা করে কিন্তু বাস্তবে সাহায্য করার জন্য কেউ আসে না।
দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাংলাদেশের আর কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই, যারা আমাদের পরাজিত করতে পারে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় আসবে।
বিএনপি দেশকে আবার অস্থিতিশীল করতে চায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আন্দোলন নামে দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। বিএনপির মতো সন্ত্রাসী দলের হাতে দেশের হাল আমরা ছেড়ে দিতে পারি না। ছেড়ে দেব না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ।