রাজধানীতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার মুষলধারে বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার রাস্তা তলিয়ে যায়। কোথাও কোথাও বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। মাঝরাত পর্যন্ত ওইসব সড়কে থমকে থাকে গাড়ি। জলমগ্ন এসব সড়কে আটকা পড়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহান নগরবাসী। বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ছে; কোথাও কোথাও আগুন লেগেছে-এমন খবরও পাওয়া যায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারাও গেছেন চারজন।
বৃষ্টির পরদিন শুক্রবার দুপুরেও রাজধানীর অনেক এলাকা এখনো পানির নিচে। এসব এলাকার মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
আজ সকাল থেকে সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা এখনো পানির নিচে। কোথাও কোথাও কোমরসমান পানি। রাজধানীর নিউমার্কেটের ভেতর ও সামনের সড়ক পুরোটাই পানির নিচে ডুবে আছে। নীলক্ষেতের সামনের সড়কে পানি জমে থাকার কারণে তেমন কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। তবে সাধারণ মানুষ রিকশা ও ভ্যানে করে ওই সড়ক পারাপার হচ্ছেন। রিকশার পাদানি ও ভ্যানের পাটাতন পর্যন্ত ডুবে থাকছে সড়কে জমে থাকা পানিতে।
নিউমার্কেটের ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে, আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নিউমার্কেটে সকাল ১০টার পর থেকেই শুরু হয় মানুষের ভিড়। কিন্তু আজ সড়কের পানি পেরিয়ে কেউ নিউমার্কেটের ভেতরেই ঢুকতে পারছেন না। তবে নিউমার্কেটের উল্টো দিকে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে দু-একটি দোকান খোলা দেখা গেলেও সেখানে যাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই।
নিউমার্কেটের ভেতরসহ এই সড়কে পানি জমে থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ফুটপাত ও নিউমার্কেটের ভেতরে থাকা হকারেরা। তাদের অনেকের জিনিসপত্র সব ভিজে গেছে। বর্তমানে সেসব অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ারও কোনো উপায় নেই।
নীলক্ষেত থেকে আজিমপুর সড়কে কোমরসমান পানি জমে আছে। এই সড়কে আজ বেলা ১১টার দিকে বেশ কিছু প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে থাকতে দেখা গেছে। যানবাহন না পেয়ে মানুষ রিকশা ও ভ্যানে করে পানি পেরিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। আবার পর্যাপ্ত রিকশা-ভ্যান না পাওয়ায় অনেককে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
দোয়েল চত্বর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সড়কে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আছে। ওই সড়কে পানি জমে না থাকলেও ডাল ভেঙে থাকায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পেছনে ঢাকা নার্সিং কলেজের ভেতরেও হাঁটুসমান পানি জমে আছে।
পানি জমে আছে পুরান ঢাকার বংশালের প্রধান সড়কেও। আজ সকালে বংশাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে জমিয়ে রাখা ময়লা–আবর্জনা ও ড্রেনের ময়লা পানি মিলেমিশে একাকার। স্থানীয় মানুষদের এই নোংরা পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়কের পাশের নিচু দোকানগুলোর ভেতরও ঢুকে পড়েছে পানি।
শুক্রবার এই এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। ফলে দোকানপাট খোলেনি। তবে প্রতিদিনই খাবারের দোকানগুলো খোলা থাকে। আজ বৃষ্টির পানির কারণে সেগুলো খোলেনি।