অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে ব্যাংকের পর এবার ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) সুদহার বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। নতুন নির্দেশনায় ঋণ ও আমানত দুটোরই সুদহার বাড়ানো হয়েছে।
রোববার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসের ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে অক্টোবর মাসে ঋণ দিতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যদিকে আমানতে আড়াই শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করতে পারবে। সেই হিসেবে, চলতি অক্টোবর মাসে এনবিএফআইগুলোর সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং আমানতে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। তবে অক্টোবরে ঠিক করা ঋণের এই সুদহার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।
এতে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত নীতিমালার আওতায় আমানত ও ঋণের সুদহার নির্ধারণ করবে তবে আমানতের সুদহার স্মার্ট-৬ এর সাথে আড়াই শতাংশ যোগ করতে হবে। কোনোভাবেই এর বেশি হবে না। সেই হিসাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতের সুদহার ৯ দশমিক ৭০ শতাংশের বেশি হবে না। আর ঋণের সুদহার স্মার্ট-৬ এর সাথে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ যোগ করতে হবে। অর্থাৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদহার ১২ দশমিক ৭০ শতাংশের বেশি হবে না।
এতে আরও বলা হয়েছে, নতুন নির্দেশনা জারির পর থেকে নতুনভাবে বিতরণকৃত ঋণের সুদহার নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া, অন্যান্য সব নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন-১৯৯৩ এর ১৮ (ক), (ঘ) এবং (ছ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে এখন ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, তা হলো- ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা– সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের জুলাইয়ে ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, আগস্টে হয় ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। সবশেষ সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২০ শতাংশে।
গত ৫ অক্টোবর ঋণের সুদহার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বলা হয়, এখন থেকে ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ রেট বাড়িয়ে সাড়ে ৩ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশের বদলে সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ মার্জিন যোগ করতে হবে।