দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৯৮ আসনের ফল প্রকাশিত হয়েছে। এই নির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২২ জন, জাতীয় পার্টির ১১ জন, স্বতন্ত্র ৬২ জন ও অন্যান্য ৩ জন ।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল দশটায় নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পড়ানো হবে। মঙ্গলবার সংসদ সচিবালয়ের বরাতে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা যায়, মঙ্গলবারের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নব নির্বাচিতদের তালিকা বা ফল সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করবে ইসি। গেজেট প্রকাশ হলে আইন অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণ করতে হবে নতুন সংসদ সদস্যদের।
সংবিধানের ১৪৮-এর ২(ক) ও ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বলা হয়েছে, ‘সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো ব্যক্তি যে কোনো কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার উহার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে উক্ত শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি।’
এরপর ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হয়। ভোটের কত দিনের মধ্যে গেজেট হবে, সে বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে আজকেই গেজেট প্রকাশিত হবে।
দ্বাদশ সংসদের নতুন সংসদ সদস্যদের শপথ পাঠ করাবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এমপিদের শপথের আগে নতুন সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথমে শিরীন শারমিন নিজে শপথ নেবেন। এরপর তিনি অন্যদের শপথ পাঠ করাবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জাতীয় সংসদ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নবনির্বাচিত এমপিরা শপথ নিলে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর এখন সংসদ সদস্যদের শপথ এবং মন্ত্রিসভা গঠনের আলোচনা ও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জাতীয় সংসদে বিরোধীদল কোনটি হবে, তা স্পষ্ট নয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বাইরে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায়, বিরোধীদল কারা হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সংসদ সদস্যদের শপথের বিষয়টি জাতীয় সংসদ সচিবালয় এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ ও মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টনের কাজে দাপ্তরিক সহায়তা দিয়ে থাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নির্বাচনের পরের দিন প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট শাখা এসব নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে।
রীতি অনুযায়ী, নবনির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের পর শপথের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্পিকারের কাছে তা পাঠাবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণের ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪১.৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সারাদেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভোট হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন বিদেশি পর্যবেক্ষক দল।
নির্বাচন দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওআইসি, রাশিয়া, ফিলিস্তিন, কানাডা, গাম্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত, রাশিয়া, চীন, ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কা অভিনন্দন জানিয়েছে।