কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৬টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বের কালোয়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ দুই ভাই ওই এলাকার মৃত কেঁদো শেখের ছেলে মো. জিয়ার হোসেন (৪৫) ও আলতাফ হোসেন (৫০)। তারা বর্তমানে ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা দুজনই পেশায় জেলে।
দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার। তিনি জানান, ছড়রা গুলিতে আহত হয়ে দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বের কালোয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল খালেকের সাথে মৃত কেঁদো শেখের ছেলেদের প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সামাজিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। পদ্মা নদীতে মাছ ধরা, যেকোন নির্বাচনসহ বিভিন্ন অজুহাতে প্রায়ই দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে বের কালোয়ারা মোড়ে দু’পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এবিষয়ে আহতদের ছোট ভাই ইয়ারুল আলী অভিযোগ করে জানান, সাবেক মেম্বার খালেক ও তার দুই ছেলে রিপন এবং লিটনের সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। তারা নিয়মিত জেলেদের কাছে চাঁদা দাবি করে। এসব নিয়ে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ওই গ্রুপের সাথে তাঁদের বিরোধ চলছে। বিরোধের জেরে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় প্রতিপক্ষ তাদের ওপর হামলা চালায়। শুক্রবার সকালেও তারা দুই ভাইকে গুলি করে আহত করেছে।
তার অভিযোগ, নৌকায় ভোট দেয়ার কারণেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে প্রতিপক্ষরা। অতীতের ঘটনায় কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে খালেক মেম্বারের ছেলে রিপন আলী জানান, প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছিল। সেজন্য তারাও প্রতিপক্ষকে পাল্টা ধাওয়া দিয়েছিলেন। সেসময় কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। তবে গোলাগুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানান, সকালে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন তারা। অতীতেও কয়েকবার সেখানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গোলাগুলির ঘটনা অস্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম জানান, পূর্বশত্রুতা ও সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।