রাজধানী ঢাকায় সকাল-সন্ধ্যা কর্মজীবী মানুষের গণপরিবহনে ওঠার ভোগান্তি নিত্য ঘটনা। যদিও কাঙ্ক্ষিত বাসের দেখা মেলে, তবু উঠতে হয় লড়াই করে। ঠাসাঠাসি করে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা দায়। তার ওপর যানজটে অতিষ্ঠ জীবন। এ যেন যুদ্ধে জেতার মতো।
অবশেষে রাজধানীতে সেই যুদ্ধের অবসান ঘটে এসেছে স্বস্তি। এখন থেকে মেট্রোরেলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলাচল করা যাবে। এতে উত্তরা-মতিঝিল রুটে অফিসে যাতায়াত করা যাত্রীরা পাচ্ছেন বিশেষ সুবিধা।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) প্রথমবারের মতো উত্তরা-মতিঝিল রুটে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা ৪০ পর্যন্ত চলাচল শুরু করেছে মেট্রোরেল। সপ্তাহের মঙ্গলবার বাদে বাকি ছয় দিন যাত্রীদের নিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ছুটবে মেট্রোরেল।
গত ৩১ ডিসেম্বর সবশেষ মেট্রোরেলের শাহবাগ ও কারওয়ানবাজার স্টেশন চালু হয়। এর মধ্য দিয়ে এমআরটি-৬ লাইনের উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬ স্টেশনে চালু হলো মেট্রোরেল।
মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, সারাক্ষণই যাত্রীদের ভিড় ছিল। তবে সন্ধ্যার পর মতিঝিল, শাহাবাগ ও ফার্মগেট স্টেশনে ছিল অফিস শেষে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের সংখ্যা বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ছিল শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরার চাপ।
মতিঝিল স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, সন্ধ্যায় যাত্রীদের স্টেশন থেকে নেমে সড়ক পর্যন্ত লম্বা লাইন। কারও মনে স্বস্তি, কারও আবার মেট্রোরেলে চড়ার উল্লাস।
মতিঝিল থেকে মিরপুরের উদ্দেশে যাওয়া যাত্রী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মাইদুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যার মেট্রোরেল চালু হওয়ায় যারা চাকরি করি, তাদের জন্য চলাচল সহজ হয়েছে। সকালে আগে আসার চেষ্টা করলে আসা যায়। কিন্তু সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। মতিঝিল থেকে মিরপুরে সরাসরি বাসও ছিল না। গুলিস্তান পর্যন্ত যেতে হয়। সন্ধ্যায় মেট্রোরেল চালু হওয়ায় এখন আর সমস্যায় পড়তে হবে না।
কাওরানবাজারে ব্যবসায়িক কাজে আসা সাজেদুল ইসলাম বলেন, অন্যদিন বাসে করে যাওয়া-আসা করতাম। আজ মেট্রোরেলে যাওয়ার চিন্তা করলাম। এর আগেও সকালে মেট্রোরেলে চড়ে এই বাজারে আসা-যাওয়া হইছে। বাসের চেয়ে ঝামেলা কম। তবে আজ মানুষের প্রচুর ভিড় দেখলাম।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী সুলতানা আক্তার বলেন, সকাল-সন্ধ্যায় মেট্রোরেল চালু হওয়ায় নারী চাকরিজীবীদের জন্য বেশি সুবিধা হয়েছে। আমাদের মতো চাকরি করা নারীদের বাসায় ফেরার তাড়া বেশি থাকে। কারণ বাসায় গিয়েও সংসারের নানা কাজ করতে হয়। অনেক সময় বাসার কাজে অনেক রাত হয়ে যায়। আবার সকালে উঠে অফিস ধরতে হয়। সব সময় তাড়াহুড়া লেগেই থাকে। এখন মেট্রোরেলে যাতায়াতের ফলে অনেক সময় বেঁচে যাবে।