টঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামীকাল শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এবার অংশ নিচ্ছেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। ইতোমধ্যে সামিয়ানা টাঙানোর কাজ সমাপ্ত হয়েছে। মুসল্লিদের ভিড়ও বাড়ছে। তিন দিনের ইজতেমা ঘিরে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় ধর্মীয় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
শুক্রবার ফজরের নামাজের পর ধর্মীয় বয়ানের মাধ্যমে শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। পরবর্তী তিন দিন দেশ বিদেশের মাওলানারা বয়ান করবেন। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমা। জানা গেছে, সন্ধ্যায় দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকে সা’দের তিন ছেলেসহ ১৪ জনের একটি জামাত ইজতেমায় এসে পৌঁছেছে।
ইজতেমায় অংশ নিতে আজ বৃহস্পতিবারও সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা আসছেন। এবারও ইজতেমা স্থলের আশেপাশে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
এদিকে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মাওলানা সা’দকে ইজতেমায় আসার অনুমতির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার অনুসারী বাংলাদেশ মুসল্লি পরিষদ। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা কোনো প্রকার ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করলে তার দায়ভার সরকারকে নিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, ইজতেমা ময়দানের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। প্রথমপর্বের মুসল্লিদের ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা ইতোমধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ময়দানের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদের পূর্বপাড়ে নামাজের মিম্বর ও উত্তর-পশ্চিম কোণে বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্ধারিত কামরার পাশে বয়ানমঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও শামিয়ানা টানানো, বিদ্যুৎ ও মাইক সংযোগের জন্য তার টানানোসহ তাশকিল কামরা, জুড়নেওয়ালি জামাতের কামরা, তুরাগ নদের পশ্চিমপাড়ে বধিরদের বয়ান শোনার জন্য পৃথক কামরা তৈরি করা হয়েছে।
বুধবার থেকেই দেশি ও বিদেশি মেহমানরা আসতে শুরু করেছেন। আজকের মধ্যেই দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি ময়দানে এসে তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নেবেন বলে জানিয়েছেন দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ।
অন্যদিকে প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমাও ভালোভাবে পরিচালিত হবে বলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র্যাব, পুলিশ, সিটিএসবি, ডিএসবিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন। এদিকে ইজতেমা চলাকালে ট্রাফিক ও যাতায়াত ব্যবস্থা আগের মতোই বলবৎ থাকবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর এই ময়দানে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা হয়ে আসছে। তবে তাবলীগ জামায়াতের নেতাদের বিভেদের কারণে ২০১৭ সাল থেকে দুই পর্বে হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা।