প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলে থেকেও সংসদে কোস্ট গার্ড আইন পাস করেছিল আওয়ামী লীগ। এখন সমুদ্রে বাংলাদেশ নিজস্ব সীমানার মালিক হয়েছে। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে এটি সম্ভব করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আর এবার সমুদ্রের সম্পদ আহরণে গবেষণা জাহাজ সংগ্রহের পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার বলেও জানান শেখ হাসিনা।
রোববার (১০ মার্চ) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্টগার্ডের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এছাড়া এ সময়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কোস্টগার্ডের ভি স্যাটনেট সিস্টেম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংযোগস্থল হিসেবে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে কোস্টগার্ডকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
প্রত্যেকটি বাহিনীকে প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন করে গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কোস্ট গার্ডকেও ভূমিকা রাখতে হবে। জনগণের বন্ধু হয়ে কাজ করতে হবে।
নিজস্ব প্রশিক্ষণ বেইজ নির্মাণ করা ও অত্যাধুনিক নৌযান সংযোজনে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা এখন অনেক দক্ষ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাহিনীর জন্য ডকইয়ার্ড নির্মাণ হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায়। এ ছাড়া আরও দুটি জাহাজ ও হেলিকপ্টার যুক্ত হচ্ছে কোস্টগার্ডে। আরও যুক্ত হবে আধুনিক মেরিটাইম সার্ভিল্যান্স সিস্টেম। অচিরেই ত্রিমাত্রিক বাহিনী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জনকে বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। পঁচাত্তরের পর কোনো সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দেশ ও দেশের অর্থে কেনা প্রতিটি জিনিসের যত্ন নিতে কোস্টগার্ডের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান নবনির্মিত বিসিজি স্টেশন কুতুবদিয়া, মহেশখালী, মীরসরাই, সন্দ্বীপ, নিদ্রাসকিনা এবং বিসিজি আউটপোস্ট শাহপরী উদ্বোধন করবেন।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ভি স্যাটনেট সিস্টেম চালু করা হবে বাহিনীর সদর দপ্তরসহ তিনটি জোনে। এ প্রযুক্তি ছয়টি জাহাজ ও সাতটি স্টেশনেও ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা।
পাশাপাশি বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা, নাবিক ও অসামরিক ব্যক্তিদের প্রধানমন্ত্রী পদক দেবেন। এবার ১০ জন করে পাচ্ছেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পদক, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক, প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড পদক এবং প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বর্তমানে দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় কাজ করছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষা, বনজ সম্পদ।
অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের নবনির্মিত ছয়টি ভৌত অবকাঠামো (বিসিজি স্টেশন কুতুবদিয়া, মহেশখালী, মিরসরাই, সন্দ্বীপ, নিদ্রাসকিনা ও বিসিজি আউটপোস্ট শাহপরী) এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহায়তায় পরিচালিত কোস্টগার্ডের সদর দফতরসহ তিনটি জোন, ছয়টি জাহাজ এবং সাতটি স্টেশনে নব সংযোজিত উন্নত নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি- ভি-স্যাটনেট যোগাযোগব্যবস্থা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উন্নয়ন, সাহসী অপারেশন ও সেবামূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বীকৃতি স্বরূপ কোস্টগার্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০ জন কর্মকর্তার হাতে পদক তুলে দেন সরকারপ্রধান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।