মালিক মনজুর রোম ইতালি
ঘটনার শুরুটা ইতালির নিজস্ব সময় ১১:২০ মিনিটে, ফিউমিসিনো এয়ারপোর্ট থেকে এক যাত্রীর ফোন কলের মাধ্যমে । ফোনের ওপাশ থেকে একজন ভদ্রমহিলা অকুত কণ্ঠে অনুরোধ করে বলেন তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর নির্ধারিত সময় এর মধ্যে আসতে পারছেন না, এক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্য। সম্মানিত যাত্রী এটাও উল্লেখ করেন যে ,এই ফ্লাইটে তিনি যেতে না পারলে তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা হবে নাহ।
কিন্তু ততক্ষণে ঘড়ির কাঁটায় ২০/২৫ মিনিট বিলম্ব হয়ে গেছে। সুতরাং নিয়মানুযায়ী বিমান টিকেট কাউন্টার তাঁদের সকল কার্যক্রম সমাপ্ত করে ফেলেছে এবং তাঁকে বোর্ডিং এ পৌঁছান অনেকটাই অসম্ভব ছিল। এমন মুহূর্তে আমাদের ইতালির মাননীয় রিজিওনাল ম্যানেজার জনাব আবদুল্লাহ আল-হোসেন তার মহানুভবতার পরিচয় দেন। তিনি ইতিমধ্যে বিমানে থাকা উদ্ধতর কর্তৃপক্ষ এর সঙ্গে কথা বলেন এবং কোনোভাবে সেই যাত্রী কে সাহায্য করা যায়কিনা সেই মর্মে অনুরোধ করেন। এরপর সব কিছু বিবেচনা সাপেক্ষে বিমান কর্তৃপক্ষ জনাব আবদুল্লাহ সাহেবকে জানান তাঁরা যাত্রী কে শুধুমাত্র তার হ্যান্ড লাগেজ সহ ভীতরে প্রবেশ করাতে পারবেন।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধে আর এক জায়গায়- সাধারণত যাত্রী বিমানে প্রবেশঅব্দি ইমেগ্রশন প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যেতে হয় যেটা আমাদের এই যাত্রীর ক্ষেত্রে সম্ভব ছিল নাহ। উপরুন্ত কারনে যাত্রীকে বিমান কর্তৃপক্ষ ফাস্ট ট্রাক ( Fast Track )-এ করে নিয়ে যায় বোর্ডিং সেকশন এ। সেখানে বোর্ডিং কার্ড না থাকায় নিরাপত্তা কর্মী দের দ্বারা সাময়িক ভাবে বাঁধাগ্রস্ত হলে জনাব আবদুল্লাহ পুনরায় সুপারভাইসার কে কল করেন। উনার অবস্থান বোর্ডিং T43 তে হওয়াই তার আসতে আরও ১০ মিনিট বিলম্ব হয়। পরবর্তীতে ওইখানে অবস্থানরত কর্তৃপক্ষদের উপস্থিততে তার ইমেগ্রেসন প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়।
ইতিমধ্যে বিমান প্রস্থানের সময় ,এমতাবস্থায় বিমান চালকের পক্ষ থেকে জরুরী নির্দেশাবলী আসে যে তাদের পক্ষে আর অপেক্ষা করা সম্ভব না এবং উড্ডয়নের উদ্দেশ্যে বিমানের গেট লক করে দেয়া হয় । ঠিক সেই মুহূর্তেই আমাদের যাত্রী সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ফেলেন এবং পুনরাই কর্তৃপক্ষের কলে বিমান এর গেট খুলে দেয়া হয়। এমন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি অতিক্রম করার পর আমাদের যাত্রী তাঁর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান বিমানের সকল সদস্যকে।
এইটা বাংলাদেশ বিমানের জন্য নতুন কোন অভিজ্ঞতা না। এরকম অনেক না বলা অসাধারন নিদর্শন রয়েছে যা বিমানের সকল পর্যায়ের সদস্যদের দ্বারা প্রতিনিয়ত আমাদের যাত্রী উপকৃত হচ্ছেন। আজ আমরা রিজিওনাল ম্যানেজার জনাব আবদুল্লাহ আল-হোসেন এর সহায়তাই এই গল্পটি তুলে ধরলাম আপনাদের উদ্দেশে যেখানে বিমান এয়ারলাইনস আমার, আপনার সকলের জন্য জরুরি মুহূর্তেও একটি সম্পূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক পরিষেবা প্রদান করেছিল।
পরিশেষে আমরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এর অংশীদার হতে পেরে গর্বিত।
আমাদের দেশীয় বিমান আমাদের গর্ব।