জাবি প্রতিনিধি।। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) রসায়ন বিভাগের ৪৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের কর্মী জাকিরুল ইসলাম সম্প্রতি কিছু গোষ্ঠী কর্তৃক তার বিরুদ্ধে আনা নানা অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
শনিবার (১৪ই ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,”আমি সমাজের সচেতন অংশ হিসেবে বরাবরই সঠিক নীতি, নৈতিকতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করে আসছি।বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সাইন্সক্লাবসহ নানা সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে সামাজিক,মানবিক ও দেশ গঠনমূলক কাজে অংশগ্রহণ করি। আমার ব্যক্তিগত, সামাজিক, এবং রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ইতিবাচক দিকগুলোতে ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজনৈতিক ভাবে সমালোচিত করার হীন চেষ্টায় একটি চক্রান্তমূলক গোষ্ঠী মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে আমার সম্মানহানির চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাবের নেতৃত্বে থাকাকালীন সামাজিক কার্যক্রমের বিভিন্ন ছবি, ক্লাবের বিভিন্ন সামষ্ঠিক শিক্ষাসফর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ক্লাবের সাইন্স ফেস্টিভ্যাল ও ম্যাথ অলিম্পিয়াডে আমন্ত্রিত অতিথিদের ছবি এআই এবং ফটোশপের সমন্বয়ে ভিত্তিহীন সাইবার সন্ত্রাস করছে ষড়যন্ত্রকারী প্রতিপক্ষ।
আমি এ ধরনের সকল অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এহেন সাইবার বুলিং এবং ডিজিটাল তথ্যসন্ত্রসী কার্যক্রমে যুক্তদের বিষয়ে দেশীয় আইনের যথাযথ সহায়তা নেব।
ছোটবেলা থেকেই আমি সৎ চরিত্র, বিনয়, এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার একজন মানুষ হিসেবে পরিচিত। আমি সাধারণ এক বিএনপি পরিবারের সন্তান। আমার চাচাতো ভাই আহসানুল্লাহ বুলবুল উপজেলা বিএনপির যুবদলের আহ্বায়ক। ছাত্রজীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমি সামাজিক, ছাত্রবান্ধব, এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করি। নেতৃত্বের গুণাবলির কারণে আমি সায়েন্স ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করার গৌরব অর্জন করি এবং ক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়স্থ অতিথিদের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্বশীলতা পালন করি।
২০২৩ সালে শহীদ রফিক-জব্বার হলের ৩০২ নম্বর রুমে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগের কিছু সদস্য আমার এবং আমার সিনিয়র-জুনিয়রদের চরম গালিগালাজ, হুমকি, এবং অপমান ও হেনস্তা করে রুম থেকে বের করে দেয়। এই ঘটনা আমার হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী অবগত।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বিভিন্ন সময় ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন, ভিসি পদত্যাগ আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূলক কর্মসূচিতে সামনের সারিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। ১৫ জুলাই ভিসি ভবনে অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের হামলা থেকে বাঁচাতে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করি যা বিভীষিকাময় উক্ত রাতে ছাত্রলীগের আক্রমণের শিকার শিক্ষার্থীরা মাত্রই অবগত।
সর্বশেষ জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাভার এলাকা এবং জাবির বিভিন্ন অংশে নেতৃত্ব দিয়েছি, শিক্ষার্থীদের সক্রিয় রাখার জন্য বিভিন্ন টিমের মাধ্যমে কাজ করেছি। ৫ই অগাস্টে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে গণভবন অভিমুখী লংমার্চ নিয়ে স্বৈরাচারী হাসিনার বাসভবন গণভবন পতনে অংশ নেই। এছাড়াও ছাত্রলীগের অপরাজনীতি ও আওয়ামী অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি শিক্ষার্থী আমার কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অপশাসনের সময় যখন কোন শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক অধিকার ও পরিচয় প্রকাশের সুযোগ ছিল না তখন প্রথম বর্ষ থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর সাবেক ছাত্রদল সভাপতি সোহেল রানা ভাইয়ের সাথে রাজনৈতিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে এসেছি এবং ছাত্রদলের জাতীয় প্রোগ্রামগুলোতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি।
৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল ক্যাম্পাসগুলোতে যখন স্বাধীনতা বিরোধীরা এবং আওয়ামী দোসররা অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি এবং আমার সহযোদ্ধারা সর্বপ্রথম ছাত্রদলের ব্যানার হাতে প্রোগাম করি। নিয়মিত শিক্ষার্থীবান্ধব ও রাজনৈতিক সচেতন এক্টিভিটির মাধ্যমে ছাত্রদলের প্রতি শিক্ষার্থী সহ সকল স্টেকহোল্ডারদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা ও সমর্থন তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি।
সম্প্রতি আমার এমন কার্যক্রমে ঈর্ষান্বিত হয়ে স্বার্থান্বেষী চক্রান্তকারী গোষ্ঠী ক্যাম্পাসের মাঝে আমার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতায় ভীত হয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নামে মিথ্যা এআই সৃষ্ট স্ক্রিনশট ও অভিযোগ ছড়িয়ে আমাকে হেয় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং ষড়যন্ত্রমূলক। আমি এই অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই এবং সংশ্লিষ্টদের এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার না ছড়িয়ে গঠনমূলক কাজে মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি এবং এহেন সাইবার বুলিং এবং ডিজিটাল তথ্যসন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্তদের বিষয়ে দেশীয় আইনের যথাযথ সহায়তা নেওয়ার প্রত্যয়ব্যক্ত করছি।”
আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানানিয়ে বলেন, “সাইবার বোলিং এবং ডিজিটাল সন্ত্রাস কে রূখে দিন, সত্য যাচাই করে নিন এবং অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সচেতন থাকুন। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে, ক্যাম্পাসে একটি মুক্ত, গণতান্ত্রিক এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা সবাই একসাথে কাজ করি।”