১৭ বছর কারাবাসের পর কারামুক্ত হয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টায় কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার। তিনি জানান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর কারাগার থেকে মাত্র বেরিয়ে গেছেন।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দায় থেকে খালাস পান লুৎফুজ্জামান বাবর। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়র পর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরকে ৭৮ রিমান্ডে নিয়ে চাপ দেওয়া হয়েছিল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জড়িয়ে জবানবন্দি দিতে। এই জবানবন্দি দিলে তাকে (বাবরকে) আসামি না করে সাক্ষী করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৭৮ দিন রিমান্ডে থাকার পরও তিনি এই জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। যে কারণে তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়।
২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয় এবং একটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতন হওয়ার পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর।
এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। ২১ আগস্টের মামলায়ও বাবরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারক আদালত।
লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নেত্রকোণা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোণা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অষ্টম সংসদে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।