ই এম আকাশ, বিশেষ প্রতিনিধি, কাতার।। “যে দেশে গুণীর সমাদর নেই সেই দেশে গুণীজন জন্ম হয় না” এই স্লোগানকে সামনে ১৩-০৫-২০২৫ইং সকাল ১০টায় ইসলামিয়া মহিলা মাদরাসা মিলনায়তনে এক বিশেষ সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহ পরীর দ্বীপের কৃতিসন্তান ড. হাবিবুর রহমান সাহেব। ইসলামিয়া মহিলা মাদরাসার পক্ষ থেকে ক্রেস্ট সম্মাননা প্রদান করা হয়।
ড. হাবিবুর রহমান প্রশ্নোত্তর পর্বসহ প্রায় তিনঘণ্টা যাবত মত বিনিময় করেন। উক্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, শাহ পরীর দ্বীপে একসময় নারীদের শিক্ষার তেমন ব্যবস্থা ছিলো না। আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমানে মহিলা মাদরাসার কারণে পর্দার সাথে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি সবাইকে কারিগরি শিক্ষা তথা উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান করেছেন।
ড. হাবিবুর রহমান প্রশ্নোত্তর পর্বে সমাসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর করা প্রশ্নের উত্তর ও শাহ পরীর দ্বীপের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি করার বিষয়ে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। উনার উপস্থিতি ইসলামিয়া মহিলা মাদরাসাকে ধন্য করেছে। আমরা সবাই তাঁর সুস্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করি ও তার দীর্ঘায়ু হায়াতের কামনা করি।
উল্লেখ্য যে, তিনি শাহ পরীর দ্বীপের গর্ব, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, জনাব ড. হাবিবুর রহমান সাহেব। তিনি শাহ পরীর দ্বীপে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া এই দ্বীপে-ই সমাপ্ত করেন। ১৯৭০সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাস বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৭২ সাল হতে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে শিক্ষকতা করেন।
তিনি ১৯৭৭ সালে কানাডার একটি ইউনিভার্সিটি থেকে ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পরে ১৯৮২ সালে তিনি ইংল্যান্ডের লন্ডন ইউনিভার্সিটি হতে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে ছিলো সুন্দর ও সম্মানের রেখা।
পরে তিনি কাতারের আমিরে দেওয়ানের উপদেষ্টা পরিষদে নিয়োগ পান। সেখানেও তিনি রেখেছেন এক অভূতপূর্ব অবদান। কাতারের ইতিহাস পর্যালোচনা করে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন ২০০৬ সালের পূর্বে পালন করা তাদের স্বাধীনতা দিবসের তারিখটি ত্রুটিপূর্ণ ; তিনি তাতে ক্ষান্ত হন নি, তিনি কাতারের আসল ও সঠিক স্বাধীনতা দিবস বের করে আনলেন কাতারের ইতিহাস পর্যালোচনা করে।
বর্তমানের কাতারের মানুষ ৩রা সেপ্টেম্বর এর পরিবর্তে ১৮ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা দিবস করে পালন করে। কারণ ড. হাবিবুর রহমান কাতারের ইতিহাস পর্যালোচনা ও গবেষণা করে সত্য ইতিহাসের আলোকে ১৮ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা দিবস নির্ধারিত হয়। ২০০৭ সাল হতে নতুন তারিখে তারা স্বাধীনতা দিবস পালন করে। সবই এই দ্বীপের কৃতিসন্তান ড. হাবিবুর রহমানের অবদান।