ঢাকা , রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন অপরিহার্য: মিয়া নূরউদ্দিন আহাম্মেদ অপু নির্বাচনের তফসিল কবে, জানালেন ইসি আনোয়ারুল একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করার চিন্তা করছে সরকার জামগড়া আর্মি ক্যাম্পের রাতভর অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার তিনজন রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলা যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত ন্যায়বিচার সবার জন্য, তবু গ্রামীণ দরিদ্ররা এখনো বঞ্চিত বিএনপি পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এটাই আমাদের নেতার নির্দেশ: এম এ মালিক ডিজিটাল কোর্ট ও অনলাইন বিচার: স্বচ্ছতার নতুন দিগন্ত না নতুন সংকট? কাপ্তাইয়ে পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে বৃহৎ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার

অনেকে বলছেন ৫ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন- সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা

সাংবাদিক

‘এমন মানুষও রয়েছেন, যারা বলছেন আপনি ৫ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন। সুতরাং, মানুষ নানা ধরনের কথাই বলে। তারা বলে নির্বাচনের দরকার কী? কার নির্বাচন দরকার?’

ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক মেহেদি হাসান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে জানতে চান—নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারের এত সময় লাগছে কেন? এই প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দেওয়ার ফাঁকে আলজাজিরা টেলিভিশনের টক শো ‘হেড টু হেড’-এর উপস্থাপক ও জেটিওর প্রতিষ্ঠাতা মেহেদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দেন ড. ইউনূস ।সাক্ষাৎকারের তিন মিনিটের একটি ক্লিপ সোমবার রাতে জেটিওতে প্রচার করা হয়েছে।

আপনার অন্তর্বর্তী সরকার এক বছর ধরে ক্ষমতায়। আপনি বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে। এটা আরো পরে হওয়ার কথা ছিল। আপনি ফেব্রুয়ারিতে কেন এগিয়ে এনেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, রমজানের কারণে এগিয়ে আনা হয়েছে।

মেহেদি হাসান: আপনি সাক্ষাৎকারের শুরুতে বলেছিলেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ এখন কাজ দেখতে চায়। সমালোচকরা বলছেন, অনেক দেরি হয়ে গেছে। নির্বাচনের জন্য আরো ছয় মাস অপেক্ষা করা খুব দীর্ঘ। মানুষ ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে। কেন আমরা এর আগে নির্বাচন করতে পারছি না? নেপালের অন্তর্বর্তী নেতা ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কেন বাংলাদেশে ১৮ মাস লাগছে?

প্রধান উপদেষ্টা: নিশ্চয়ই! আপনি জানিয়েছেন, মানুষ বলছে কেন এত সময় লাগছে। আবার এমন মানুষও আছে যারা বলেন, ‘পাঁচ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন। সুতরাং, মানুষ সব ধরনের কথাই বলছে।’ তারা বলছে, ‘আপনি থাকুন। নির্বাচনের দরকার কী? নির্বাচন কার দরকার?’

মেহেদি হাসান: এমন কথা যারা বলছেন, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তারা বলেন, কেন আমরা তাড়াতাড়ি নির্বাচন করতে পারছি না? এই বিলম্ব কীসের জন্য?

প্রধান উপদেষ্টা: যখন তারা এই কথা বলে, তখন তা গণতন্ত্র নিয়ে নয়, সুশাসন নিয়ে কথা বলে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত শাসন দেখতে চাই। সে জন্যই তারা বলে, আপনি থাকুন! কারণ নির্বাচনের পর আমরা বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে চাই না। আপনি এক ধরনের মতামত তুলে ধরেছেন, আমিও আরেক ধরনের মতামত তুলে ধরলাম। কোনটি বেশি শক্তিশালী?

মেহেদি হাসান: কিন্তু আপনি কি আজ বলবেন, নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে এত সময় লাগার কারণ কী?

প্রধান উপদেষ্টা: আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা কতদিন থাকব তা কেউ নির্ধারণ করে দেয়নি। আমরা কতদিন থাকব সে সিদ্ধান্ত আমাদের। তবে আমাদের তিনটি কাজ করতে হবে। একটি হলো সংস্কার, একটি বিচার এবং শেষটি নির্বাচন। আমরা সংস্কারের এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছি। এটি একটি বিরাট এজেন্ডা। আপনি যদি শুধু নির্বাচন করেন, তবে সেই পুরোনো বিষয় আবার ঘটবে। কারণ আইন, নিয়ম, পদ্ধতি একই রয়ে গেছে। তাই ছাত্রদের নেতৃত্বে জনগণের একটি দাবি হলো সংস্কার করা। সুতরাং, আগে নিশ্চিত করতে হবে যে, ফ্যাসিবাদের সব শিকড় উপড়ে ফেলা হয়েছে, যাতে ভিন্ন ধরনের কাঠামো তৈরি হয়; যাতে আগের মতো সরকার আবার ফিরে আসতে না পারে। সেটাই আমাদের এজেন্ডা।

মেহেদি হাসানের সাক্ষাৎকারে আরো কিছু বিষয়ে কথা বলেন ড. ইউনূস। এর মধ্যে ছিল রোহিঙ্গা সংকট ও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়।

সূত্রঃ আমার দেশ

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৯:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৫৬৩ Time View

অনেকে বলছেন ৫ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন- সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটের সময় : ০৯:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘এমন মানুষও রয়েছেন, যারা বলছেন আপনি ৫ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন। সুতরাং, মানুষ নানা ধরনের কথাই বলে। তারা বলে নির্বাচনের দরকার কী? কার নির্বাচন দরকার?’

ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক মেহেদি হাসান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে জানতে চান—নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারের এত সময় লাগছে কেন? এই প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দেওয়ার ফাঁকে আলজাজিরা টেলিভিশনের টক শো ‘হেড টু হেড’-এর উপস্থাপক ও জেটিওর প্রতিষ্ঠাতা মেহেদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দেন ড. ইউনূস ।সাক্ষাৎকারের তিন মিনিটের একটি ক্লিপ সোমবার রাতে জেটিওতে প্রচার করা হয়েছে।

আপনার অন্তর্বর্তী সরকার এক বছর ধরে ক্ষমতায়। আপনি বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে। এটা আরো পরে হওয়ার কথা ছিল। আপনি ফেব্রুয়ারিতে কেন এগিয়ে এনেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, রমজানের কারণে এগিয়ে আনা হয়েছে।

মেহেদি হাসান: আপনি সাক্ষাৎকারের শুরুতে বলেছিলেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ এখন কাজ দেখতে চায়। সমালোচকরা বলছেন, অনেক দেরি হয়ে গেছে। নির্বাচনের জন্য আরো ছয় মাস অপেক্ষা করা খুব দীর্ঘ। মানুষ ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে। কেন আমরা এর আগে নির্বাচন করতে পারছি না? নেপালের অন্তর্বর্তী নেতা ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কেন বাংলাদেশে ১৮ মাস লাগছে?

প্রধান উপদেষ্টা: নিশ্চয়ই! আপনি জানিয়েছেন, মানুষ বলছে কেন এত সময় লাগছে। আবার এমন মানুষও আছে যারা বলেন, ‘পাঁচ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন। সুতরাং, মানুষ সব ধরনের কথাই বলছে।’ তারা বলছে, ‘আপনি থাকুন। নির্বাচনের দরকার কী? নির্বাচন কার দরকার?’

মেহেদি হাসান: এমন কথা যারা বলছেন, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তারা বলেন, কেন আমরা তাড়াতাড়ি নির্বাচন করতে পারছি না? এই বিলম্ব কীসের জন্য?

প্রধান উপদেষ্টা: যখন তারা এই কথা বলে, তখন তা গণতন্ত্র নিয়ে নয়, সুশাসন নিয়ে কথা বলে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত শাসন দেখতে চাই। সে জন্যই তারা বলে, আপনি থাকুন! কারণ নির্বাচনের পর আমরা বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে চাই না। আপনি এক ধরনের মতামত তুলে ধরেছেন, আমিও আরেক ধরনের মতামত তুলে ধরলাম। কোনটি বেশি শক্তিশালী?

মেহেদি হাসান: কিন্তু আপনি কি আজ বলবেন, নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে এত সময় লাগার কারণ কী?

প্রধান উপদেষ্টা: আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা কতদিন থাকব তা কেউ নির্ধারণ করে দেয়নি। আমরা কতদিন থাকব সে সিদ্ধান্ত আমাদের। তবে আমাদের তিনটি কাজ করতে হবে। একটি হলো সংস্কার, একটি বিচার এবং শেষটি নির্বাচন। আমরা সংস্কারের এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছি। এটি একটি বিরাট এজেন্ডা। আপনি যদি শুধু নির্বাচন করেন, তবে সেই পুরোনো বিষয় আবার ঘটবে। কারণ আইন, নিয়ম, পদ্ধতি একই রয়ে গেছে। তাই ছাত্রদের নেতৃত্বে জনগণের একটি দাবি হলো সংস্কার করা। সুতরাং, আগে নিশ্চিত করতে হবে যে, ফ্যাসিবাদের সব শিকড় উপড়ে ফেলা হয়েছে, যাতে ভিন্ন ধরনের কাঠামো তৈরি হয়; যাতে আগের মতো সরকার আবার ফিরে আসতে না পারে। সেটাই আমাদের এজেন্ডা।

মেহেদি হাসানের সাক্ষাৎকারে আরো কিছু বিষয়ে কথা বলেন ড. ইউনূস। এর মধ্যে ছিল রোহিঙ্গা সংকট ও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়।

সূত্রঃ আমার দেশ