অবৈধ অভিবাসীদের ‘পশু’ ও ‘অমানুষ’ বললেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল মঙ্গলবার মিশিগান অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় এমন মন্তব্য করেন তিনি। ক্ষমতায় থাকাকালেও অভিবাসীদের বিষয়ে এই ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।
রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্প গতকাল পুলিশি পাহারায় মিশিগানের নির্বাচনী প্রচারসভায় হাজির হন। তিনি তার মন্তব্যে এ অঙ্গরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলার কথা উল্লেখ করেন। আগামী ৬ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি যদি জয়ী না হন, তবে যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে বলে সতর্ক করেন তিনি।
মিশিগানের পর উইসকনসিনের গ্রিন বে এলাকায় আরেক প্রচারসভায় বক্তব্য দেন ট্রাম্প। তিনি সেখানে এবারের নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘চূড়ান্ত লড়াই’ বলে মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধভাবে বসবাসকারী ভেনেজুয়েলার এক অভিবাসীর হাতে জর্জিয়ার এক শিক্ষার্থী খুনের অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কিছু অভিবাসী আছে যাঁরা মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। ট্রাম্প বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা তাদের পশু বলে ডাকতে নিষেধ করে। তারা তাদের মানুষ বলে। আমি বলি, তারা মানুষ নয়। তারা পশু।’
যুক্তরাষ্ট্রের এক অবৈধ অভিবাসীর হাতে খুন হওয়া মিশিগানের এক নাগরিকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে দাবি করেন ট্রাম্প। তবে ওই ব্যক্তির বোন তা অস্বীকার করেছেন।
ট্রাম্প তার বক্তব্যে দাবি করেন, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে। তারা কারাগার থেকে বা তাদের আশ্রয়দাতা দেশগুলো থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসে সহিংস অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।
তবে গবেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীরা যতটা অপরাধ করেন, তার চেয়ে বেশি অপরাধ সংঘটিত হয় স্থানীয়ভাবে জন্মগ্রহণ করা নাগরিকদের মাধ্যমে।
আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, মার্কিন কংগ্রেসে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের পক্ষে আইন পাস করার ক্ষেত্রে বাধা দিতে রিপাবলিকানদের উৎসাহ দিয়েছেন ট্রাম্প।
বাইডেনের প্রচার যোগাযোগ পরিচালক মাইকেল টেলার বলেন, ‘ট্রাম্প যে চরম আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলছেন, তাতে দেশে বিভক্তি, বিদ্বেষ ও সহিংসতা বাড়ছে।
মিশিগান ও উইসকনসিনকে দুটি সুইং স্টেট (দোদুল্যমান) বলা হচ্ছে। এ দুটি অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফলের ওপর বাইডেন বা ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে যাওয়া নির্ভর করছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে এই দুই অঙ্গরাজ্যে সামান্য ব্যবধানে হেরে যান ট্রাম্প। এবারও দুটি অঙ্গরাজ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।