আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালত অবমাননার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আইন অনুযায়ী, আদালত অবমাননার এ ধরনের মামলায় কোনো পক্ষের জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেন আদালত।
আদালতের নিযুক্ত অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের জানান, “ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা শাকিল বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানির সময় আদালত অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন, যাতে অভিযুক্তদের পক্ষে যথাযথ আইনগত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়।”
এই মামলার পটভূমিতে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর এক আবেদন দাখিল করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’–সম্পর্কিত একটি মামলার প্রসঙ্গে বক্তব্য দেওয়ার সময় শেখ হাসিনা আদালতকে অবমাননা করেন। তার বক্তব্যের অংশবিশেষ – ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’ – সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে ভাইরাল হয়।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এই বক্তব্যের একটি অডিও ক্লিপ ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করে এর সত্যতা নিশ্চিত করে। এরপরই আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করা হয়।
আদালত ৩০ এপ্রিল অভিযোগ গ্রহণ করে শেখ হাসিনা ও শাকিল বুলবুলকে ১৫ মের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তারা কোনো জবাব দাখিল না করায় ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে স্বশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আজ উভয়কে কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করে।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলেও নজর কেড়েছে।