আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রার্থিতা বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আপিলের প্রথমদিনের শুনানি শেষ হয়েছে।
৫৬১টি আপিল আবেদনের বিপরীতে রোববার (১০ ডিসেম্বর) শুনানির প্রথমদিনে ৯৪ আপিলের ৫৬টি মঞ্জুর, ৩২টি নামঞ্জুর ও ৬টির আদেশ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ সময় মনোনয়ন ফিরে পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বেশিরভাগ প্রার্থী। আর আপিল আবেদন নামঞ্জুর হওয়া প্রার্থীরা উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে সকাল ১০টার দিকে শুরু হয় আপিল শুনানি। একে একে শোনা হয় প্রার্থীদের আবেদনের পক্ষের যুক্তি। প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ ও যুক্তির ওপর ভিত্তি করে অনেকেই ফিরে পেয়েছেন প্রার্থিতা।
মনোনয়ন ফিরে পাওয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলেন- ফরিদপুর-১ আসনের মোহাম্মদ আরিফুর রহমান (স্বতন্ত্র), টাঙ্গাইল-২ আসনের মো. ইউনুস ইসলাম তালুকদার (স্বতন্ত্র), যশোর-২ আসনের এস. এম হাবিবুর রহমান (স্বতন্ত্র), জামালপুর-২ আসনের মো. জিয়াউল হক জিয়া (স্বতন্ত্র), নোয়াখালী-২ আসনের তালেবুজ্জামান (জাতীয় পার্টি), যশোর-১ আসনের মো. আক্তারুজ্জামান (জাতীয় পার্টি), কিশোরগঞ্জ-৩ মো. নাসিরুল ইসলাম খান (আওয়ামী লীগ), গোপালগঞ্জ-১ আসনের মোহাম্মদ কবির মিয়া (স্বতন্ত্র), খুলনা-৬ আসনের মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পার্টি), চট্টগ্রাম-৮ আসনের আবদুছ সালাম (স্বতন্ত্র), বরগুনা-১ আসনের মো. খলিলুর রহমান (স্বতন্ত্র), খুলনা-৪ আসনের শেখ হাবিবুর রহমান (তৃণমূল বিএনপি), মেহেরপুর-২ আসনের মোখলেসুর রহমান (স্বতন্ত্র), রংপুর-২ আসনের বিশ্বনাথ সরকার (স্বতন্ত্র), ঢাকা-২০ আসনের মো. মিনহাজ উদ্দি (বিএনএফ), ফরিদপুর-১ আসনের মাহমুদা বেগম (স্বতন্ত্র), চট্টগ্রাম-২ আসনের মোহাম্মদ শাহজাহান (স্বতন্ত্র), মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের মমতাজ সুলতানা আহমেদ (বিএনএফ), মাদারীপুর-২ আসনের ইউসুফ আলী সুমন (বিএনএম), চট্টগ্রাম-১৫ আসনের আব্দুল মোতালেব (স্বতন্ত্র), যশোর-৩ আসনের মো. মহিদুল ইসলাম (জাকের পার্টি), ঢাকা-৫ আসনের মো. কামরুল হাসান (স্বতন্ত্র), চট্টগ্রাম-১ আসনের মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন (স্বতন্ত্র), যশোর-৫ আসনের শেখ নুরুজ্জামান (বিএনএম), মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের মো. বাচ্ছু শেখ (বিএনএফ), যশোর-৩ আসনের মোহিত কুমার নাথ (স্বতন্ত্র), কুমিল্লা-২ আসনের এ.টি.এম মঞ্জুরুল ইসলাম (জাকের পার্টি), যশোর-৬ আসনের মো. আজিজুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), বরিশাল-৬ আসনের মোহাম্মদ শামসুল আলম (স্বতন্ত্র), কুমিল্লা-৫ আসনের সাজ্জাদ হোসেন (স্বতন্ত্র), মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বিকল্পধারা বাংলাদেশ), কুমিল্লা-৫ আসনের এ ম তাহের (স্বতন্ত্র), বরগুনা-১ আসনের মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সৈয়দ নজরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), গাইবান্ধা-২ আসনের শাহ সারোয়ার কবীর (স্বতন্ত্র)।
মনোনয়ন বাতিল হয়েছে টাঙ্গাইল-৫ আসনের খন্দকার আহসান হাবীব (স্বতন্ত্র), টাঙ্গাইল ৬ আসনের সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ (স্বতন্ত্র), টাঙ্গাইল-৬ আসনের কাজী এটিএম আনিছুর রহমান বুলবুল (স্বতন্ত্র), জামালপুর-২ আসনের মো. আব্দুল হালিম মন্ডল (জাকের পার্টি), নেত্রকোণা ১ আসনের মো. ছমীর উদ্দিন (জাকের পার্টি), মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সোহানা তাহমিনা (স্বতন্ত্র), চট্টগ্রাম-৪ আসনের মোহাম্মদ ইমরান (স্বতন্ত্র), ময়মনসিংহ-১০ আসনের মোহাম্মদ আবুল হোসেন (স্বতন্ত্র), খুলনা-৪ আসনের এস. এম. মোর্ত্তজা রশিদী দারা (স্বতন্ত্র), যশোর-৬ আসনের হোসাইন মোহাম্মদ ইসলাম (স্বতন্ত্র), রংপুর-২ আসনের মো. জিল্লুর রহমান (বিএনএফ), যশোর-৫ আসনের মো. হাবিবুর রহমান (জাকের পার্টি), চট্টগ্রাম-৫ আসনের মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী (স্বতন্ত্র), চট্টগ্রাম-৫ আসনের স্বপন কুমার সরকার (স্বতন্ত্র), নেত্রকোনা-২ আসনের সুব্রত চন্দ্র সরকার (স্বতন্ত্র), বগুড়া-৭ আসনের মো. আসাফুদ্দৌলা (স্বতন্ত্র), বগুড়া-৭ আসনের জুলফিকার আলী (স্বতন্ত্র) ও বগুড়া-৭ আসনের মো. মোস্তাফিজুর রহমান মিলু (স্বতন্ত্র)।
আর সিদ্ধান্ত হয়নি কক্সবাজার-১ আসনের সালাহ উদ্দিন আহমেদ (আওয়ামী লীগ), সিলেট-২ আসনের মো. আব্দুর রব (তৃণমূল বিএনপি), ঢাকা-১২ আসনের খোরশেদ আলম খুশু (জাতীয় পার্টি) ও কুষ্টিয়া-১ আসনের মহা. ফিরোজ আল মামুনের (স্বতন্ত্র)।
ইসি জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং অফিসারদের সিদ্ধান্তের (প্রার্থিতা বৈধ বা বাতিল) বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে মোট ৫৬১টি আপিল হয়েছে। এর মধ্যে, বৈধ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে অন্তত ৩০টি। কোনো কোনো আসনের প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধেও আপিল করেছেন। বাকি আপিলগুলো হয়েছে প্রার্থিতা ফিরে পেতে।
এবার ৩০০ সংসদীয় আসনে ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। যাচাই-বাছাইয়ে ৭৩১টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন আপিল শুনে সিদ্ধান্ত দেবে। ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা জানা যাবে। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে।