ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মারা গেছেন। সঙ্গে তার সফরসঙ্গীরাও। তাদের মধ্যে আর কেউ বেঁচে নেই। এমন আশঙ্কাই করছে ইরানের সংবাদ কর্মীরা। তাদের ধারণা হেলিকপ্টারটি পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানের প্রাণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এদিকে এমন খবরে ইরানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেক মানুষকে দেখা যায় কান্নায় ভেঙে পড়তে। রাস্তায় রাস্তায় চলছে শোকের মাতম।
দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বাংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে। তবে প্রেসিডেন্ট রইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি একেবারেই পুড়ে গেছে।
জানা যায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ স্থলে ‘প্রাণের কোনো চিহ্ন নেই’ বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি। ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি ‘সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে’। খবর-বিবিসি
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান খুঁজে পেয়েছে অনুসন্ধানী দল। ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, পরিস্থিতি ‘ভালো’ নয়। খবর-বিবিসি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে গতকাল রোববার।
রাইসি ও তার সফর সঙ্গীদের সন্ধান পেতে দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চলছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, রোববার আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। তবে অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছে।
বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারে ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এ প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনির মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন বলে জানা গেছে।
ইরানের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, আমরা আর আশা রাখতে পারছি না। দুর্ঘটনাস্থল থেকে যেসব খবর আসছে তা খুবই উদ্বেগজনক। দুর্ঘটনায় সবার মৃত্যু হতে পারে।
বৈরী আবহাওয়া ও তীব্র কুয়াশা উদ্ধারকারীদের দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথ জটিল ছিলো বলে জানান তিনি।
এ অবস্থায় ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হলে ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারেন বলে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর বলছে, ওই এলাকায় সোমবার রাত পর্যন্ত বৈরী আবহাওয়া থাকতে পারে।
স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে রাতভর বৃষ্টি ও ভারী কুয়াশা পড়েছে। সোমবার পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকতে পারেও বলে জানান তিনি।