উন্নত জীবনের আসায় নৌকায় করে সমুদ্র পথে অভিবাবাসন প্রত্যাশীর ঢল থামছে না। মূলত ইউরোপের দেশগুলোতে পৌছতে ছোট্ট নৌকায় করে শতশত অভিবাসী এ পথে পাড়ি দিচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে দেশগুলোতে পৌছলেও তাদের ঠাই হচ্ছে শরণার্থী শিবিরগুলোতে। আর অনেকই চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাচ্ছেন মাঝপথেই।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিগত ২০১৪ সাল থেকে এখন অবধি বিশ্বের বিভিন্ন অভিবাসন রুটে প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি অভিবাসী৷
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএম ২০১৪ সাল থেকে যাত্রাপথে অভিবাসী মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত করেছে৷ সংস্থাটির ‘মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট’ এ সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে। গত দশবছরে ৫০ হাজারের বেশি অভিবাসী বিভিন্ন রুটে প্রাণ হারিয়েছেন৷
আইওএম বুধবার জানিয়েছে, নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশের পরিচয় জানা যায়নি৷ অর্থাৎ তারা অভিবাসী হলেও কোন দেশ থেকে এসেছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ ফলে এমনও হতে পারে যে তাদের পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুর খবর এখনো জানেনই না।
অভিবাসন রুটে প্রাণ হারানো যাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে তাদের মধ্যে নয় হাজারের বেশি আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক ছিলেন৷ আর সাড়ে ছয় হাজারের বেশি এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাগরিক৷
আইওএম বলছে, মূলত আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং মিয়ানমারের নাগরিকরা অনিয়মিত পথে অভিবাসনের চেষ্টা করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন৷ দেশ তিনটিতে গত বেশ কয়েকবছর ধরেই সংঘাত চলছে যা থেকে বাঁচতে অনেকে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত ৮ বছরে এভাবে নিহতদের মধ্যে এক হাজার ৭৯৫ জন আফগান নাগরিক৷ একইসময়ে মিয়ানমার থেকে আসা এক হাজার ৪৬৭ জন বিভিন্ন অভিবাসন রুটে প্রাণ হারিয়েছেন৷ তারা মূলত রোহিঙ্গা শরণার্থী, যাদেরকে মিয়ানমার নিজের দেশের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে না৷ আর সিরিয়ার এক হাজার ১১৮ জন নাগরিক একই সময়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকালে মারা গেছেন৷
আইওএম-এর প্রতিবেদনে ইথিওপিয়া, মেক্সিকো এবং মরক্কোর নাগরিকদের কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে৷
আইওএম-এর বিবেচনায় সবচেয়ে বিপজ্জনক রুট হচ্ছে ভূমধ্যসাগর৷ ২০১৪ সাল থেকে যেসব অভিবাসী যাত্রা পথে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের অন্তত অর্ধেক এই সাগরে মারা গেছেন৷ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে অনিয়মিত পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি ও গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা করে এই রুটে অনেক বাংলাদেশিও মারা গেছেন৷