ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে খেলাধুলার বিকল্প নেই-বিলকিস ইসলাম তাহিরপুরে কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের ১৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত খোকসা নারায়নপুর গুচ্ছগ্রামের ২৬ ঘরের ১৪ ঘরে তালা বদ্ধ খোকসায় বিয়ের আগের রাতে ডাকাতি: মূলহোতা কাদের মোল্লা গ্রেফতার সাগরে ভাঙছে সেন্টমার্টিনের তীর, নৌযান চলাচল বন্ধ, খাদ্য সংকটে দ্বীপবাসী ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা, ভোট ১৫ সেপ্টেম্বর দখলমুক্ত হলো পূর্বাচলের ১৪৪ একর বনভূমি, ১৫৫টি ঘর উচ্ছেদ রাণীশংকৈলে একই রাতে ৩ ট্রান্সফরমার চুরি ও উদ্ধার। গ্রেপ্তার- ১। এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ নেই। অবশেষে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ

এক বছরের শিশুর কামড়ে কোবরার মৃত্যু!

সাংবাদিক
বর্ষাকালে সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যুর খবর নতুন নয়। তবে এক বছরের শিশুর কামড়ে যদি একটি কোবরা সাপ মারা যায়—তবে তা নিঃসন্দেহে চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা। ঠিক এমনই অদ্ভুত একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের পশ্চিম চম্পারন জেলার একটি গ্রামে।

গ্রামের নাম মোহছি বনকাটোয়া। সেখানকার বাসিন্দা গোবিন্দ নামের এক বছরের একটি শিশু খেলছিল তার বাড়ির পাশে, আর তার মা বাড়ির পেছনে চুলা জ্বালানোর কাঠ গোছাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি সাপ বেরিয়ে আসে। শিশুটি সাপটিকে দেখে ভয় না পেয়ে উল্টো সেটিকে ধরে কামড় দেয়। এতে সাপটির মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবারের (২৪ জুলাই) এ ঘটনার ফলে খবরের শিরোনামে চলে এসেছে শিশুটি।

গোবিন্দর নানি মতিসারি দেবী বলেন, আমরা তখনই খেয়াল করি যে, এটা একটা গেহুঁওন সাপ, যাকে স্থানীয়ভাবে কোবরা বলা হয়। সাপটিকে কামড় দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই গোবিন্দ অজ্ঞান হয়ে যায়।

তাকে তড়িঘড়ি করে মঞ্ঝোলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে বেতিয়া সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসা শেষে সে এখন পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে।

শিশুটির চিকিৎসক ডা. কুমার সৌরভ জানান, ভর্তির সময় তার মুখের চারপাশ কিছুটা ফুলে গিয়েছিল। পরিবারের লোকজন জানান, সাপের মুখে কামড় দিয়েছিল সে, এমনকি হয়তো সাপের দেহের কিছু অংশ খেয়েও ফেলেছিল।

ডা. সৌরভ আরও বলেন, সাপ মানুষকে কামড়ালে তার বিষ রক্তে মিশে গিয়ে স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হানে, যা মারাত্মক হতে পারে। কিন্তু মানুষ যদি সাপকে কামড়ায়, তাহলে সেই বিষ মুখ হয়ে পেটে গিয়ে হজম হয়ে যায় এবং শরীর সেটিকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। তবে যদি কারও খাদ্যনালিতে ক্ষত বা আলসার থাকে, তাহলে সেই বিষ রক্তে মিশে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

এদিকে এ ঘটনা গ্রামবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় সাংবাদিক নেওয়াজ জানান, শ্রাবণ মাসে আমাদের এলাকায় সাপ বের হওয়া খুবই সাধারণ বিষয়; কিন্তু একটি শিশুর হাতে সাপ মারা যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে মারা যান। এর মধ্যে শুধু ভারতে মারা যায় প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ। এজন্যই ভারতকে বলা হয় ‘সর্প-দংশনের রাজধানী’।

বিহার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বিহারে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ৯৩৪ জনের। একই সময়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে প্রায় ১৭ হাজার ৮৫৯ জন।

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেকেই সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না। ভারতে সাপে কাটা মৃত্যুর ৭০ শতাংশই ঘটে বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান এবং গুজরাটে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৮:০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
৫৩২ Time View

এক বছরের শিশুর কামড়ে কোবরার মৃত্যু!

আপডেটের সময় : ০৮:০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
বর্ষাকালে সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যুর খবর নতুন নয়। তবে এক বছরের শিশুর কামড়ে যদি একটি কোবরা সাপ মারা যায়—তবে তা নিঃসন্দেহে চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা। ঠিক এমনই অদ্ভুত একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের পশ্চিম চম্পারন জেলার একটি গ্রামে।

গ্রামের নাম মোহছি বনকাটোয়া। সেখানকার বাসিন্দা গোবিন্দ নামের এক বছরের একটি শিশু খেলছিল তার বাড়ির পাশে, আর তার মা বাড়ির পেছনে চুলা জ্বালানোর কাঠ গোছাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি সাপ বেরিয়ে আসে। শিশুটি সাপটিকে দেখে ভয় না পেয়ে উল্টো সেটিকে ধরে কামড় দেয়। এতে সাপটির মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবারের (২৪ জুলাই) এ ঘটনার ফলে খবরের শিরোনামে চলে এসেছে শিশুটি।

গোবিন্দর নানি মতিসারি দেবী বলেন, আমরা তখনই খেয়াল করি যে, এটা একটা গেহুঁওন সাপ, যাকে স্থানীয়ভাবে কোবরা বলা হয়। সাপটিকে কামড় দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই গোবিন্দ অজ্ঞান হয়ে যায়।

তাকে তড়িঘড়ি করে মঞ্ঝোলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে বেতিয়া সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসা শেষে সে এখন পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে।

শিশুটির চিকিৎসক ডা. কুমার সৌরভ জানান, ভর্তির সময় তার মুখের চারপাশ কিছুটা ফুলে গিয়েছিল। পরিবারের লোকজন জানান, সাপের মুখে কামড় দিয়েছিল সে, এমনকি হয়তো সাপের দেহের কিছু অংশ খেয়েও ফেলেছিল।

ডা. সৌরভ আরও বলেন, সাপ মানুষকে কামড়ালে তার বিষ রক্তে মিশে গিয়ে স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হানে, যা মারাত্মক হতে পারে। কিন্তু মানুষ যদি সাপকে কামড়ায়, তাহলে সেই বিষ মুখ হয়ে পেটে গিয়ে হজম হয়ে যায় এবং শরীর সেটিকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। তবে যদি কারও খাদ্যনালিতে ক্ষত বা আলসার থাকে, তাহলে সেই বিষ রক্তে মিশে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

এদিকে এ ঘটনা গ্রামবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় সাংবাদিক নেওয়াজ জানান, শ্রাবণ মাসে আমাদের এলাকায় সাপ বের হওয়া খুবই সাধারণ বিষয়; কিন্তু একটি শিশুর হাতে সাপ মারা যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে মারা যান। এর মধ্যে শুধু ভারতে মারা যায় প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ। এজন্যই ভারতকে বলা হয় ‘সর্প-দংশনের রাজধানী’।

বিহার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বিহারে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ৯৩৪ জনের। একই সময়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে প্রায় ১৭ হাজার ৮৫৯ জন।

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেকেই সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না। ভারতে সাপে কাটা মৃত্যুর ৭০ শতাংশই ঘটে বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান এবং গুজরাটে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা