সবশেষ বুধবার (৩০ জুলাই) রাত ১১টায় সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়া ওই সাপুড়ের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে সকাল ১১টার দিকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের কালিগঞ্জ ইউনিয়নের কাপালিপাড়ার ইমরান আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এমন উদ্ভটকাণ্ডে আলোচনায় আসা ওই সাপুড়ের নাম মোজাহার আলী এবং সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়া সাপুড়ে হলেন বয়েজ উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন কালিগঞ্জের কাপালিপাড়ার ইমরান আলীর বাড়িতে গিয়ে একটি বিষধর কিং কোবরা সাপ ধরেন। যা ইমরান আলীর রান্না ঘরের একটি গর্তে ৫-১৬ টি বাচ্চা দিয়েছিল। সাপের বাচ্চাগুলো ধরার পর মা সাপটি ধরার সময় বয়েজ উদ্দিনকে দংশন করেন বড় সাপটি। প্রথম দিকে সাপের বিষে কিছু না হলেও বাড়িতে এসে নিস্তেজ হতে থাকেন তিনি। তকে দ্রুত ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মরদেহ বাড়িতে আনার পর একে একে আসতে থাকে কয়েকজন ওঝা ও সাপুড়ে। তাদেরই একজন মোজাহার আলী। তিনি বড় সাপসহ বাচ্চাগুলো নিয়ে নেন। পরে গাবতলা বাজারে এসে বড় সাপটি কাঁচা চিবিয়ে খান। এ সময় গাবতলা বাজারে তার সাপ খাওয়ার দৃশ্য দেখতে প্রচুর লোক ভিড় জমায়।
মোজাহার জানান, বয়েজ উদ্দিনকে হাসপাতালে নেওয়ার আগে তিনি খবর পান। সাপের পরিচয় পাওয়ার পর তিনি বলেছিলেন সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন বাঁচবেন না। হাসপাতাল থেকে তাকে ফেরত আনার পর বযেজ উদ্দিনের স্বজনরা তাকে ফোনে ডেকে আনেন। তিনি দেখেন জানান, মারা গেছেন। পরে বয়েজ উদ্দিনের ধরা সাপের বাচ্চাসহ বড় সাপটি তারা আমাকে দেন। এগুলো নিয়ে এসে এই বাজারে বড় সাপটি মেরে রক্ত মাংস খাই। আর ছোট বাচ্চাগুলো ছেড়ে দিবো। তিনি আরোও জানান, কাঁচা সাপ খাওয়া তার পুরনো অভ্যাস।
এদিকে চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করার পরও বয়েজ উদ্দিন বেঁচে ফেরার আশায় বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তার মরদেহে ঝাঁড়ফুক করা হয়। সবশেষ বুধবার রাত ১১টায় স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করেন স্বজনরা।
ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস.এম.আবু সায়েম জানান, সাপে কাটলে ঝাঁড়ফুকে কোন কাজ হওয়ার কথা না। সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে আনতে হবে। আমাদের কাছে এন্টিভেনম মজুদ আছে। লোকজনকে আরোও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে সাপের উপদ্রপ বেশি।