কক্সবাজারে আলোচিত মোরশেদ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শুক্রবার ভোরে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সেচ প্রকল্প নিয়ে বিরোধের জেরে মোরশেদকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন মাহমুদুল হক, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আবদুল আজিজ ও নুরুল হক। র্যাব বলছে, ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এখনও মামলার প্রধান আসামি আবদুল মালেকসহ বেশিরভাগ আসামি অধরা রয়েছে।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় মোরশেদকে।
আসামিদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, হত্যার আগে মারধর সহ্য করতে না পেরে আকুতি জানিয়ে মোরশেদ বলেন, ‘এখন বেশি ক্লান্ত লাগছে, একটু পর ইফতার করবো। ইফতার শেষ করলে তারপর তোমরা আমায় মেরো।’ তবে আসামিরা তাকে সে সুযোগও দেয়নি।
র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে গভীর নলকূপের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে কৃষকদের পানি দিয়ে ব্যবসা করছে গ্রেপ্তার আসামি মাহফুজুল হকের পরিবার। তাদের বিরুদ্ধে কৃষকদের নানা অভিযোগ রয়েছে। তিন মাস আগে সৌদি আরব থেকে এলাকায় আসেন মোরশেদ। তিনি কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার প্রতিবাদ করেন। এলাকায় প্রতিবাদী যুবক হিসেবে তার পরিচিতি ছিল। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, মোরশেদ সেচ প্রকল্পটি তার নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য চেষ্টা করছিলেন। এ কারণে মাহফুজুলের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
ব্রিফিংয়ে র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে একটি সিমেন্টের দোকানে বসে মাহফুজুল মোরশেদকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। বিকেলে মোরশেদ বাসা থেকে বের হয়ে বাজারে গেলে পরিকল্পনামতো তারা কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পেটায়।
র্যাব-৭ চট্টগ্রামের কোম্পানি কমান্ডার মাহফুজুর রহমান বলেন, আসামিরা টেকনাফ থেকে ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছেন, গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল কক্সবাজারের পিএমখালীর বাসিন্দা মোরশেদ ইফতারি কেনার জন্য স্থানীয় চেরাংঘর স্টেশনে গেলে সেখানে তাকে ঘিরে ধরে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।