ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় চলমান কাইজা ও সংঘর্ষ নিরসনের লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধি, গ্রাম্য মাতব্বর ও সাংবাদিকদের সাথে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামানের মতবিনিময় সভা করেছেন। শনিবার দুপুরে সালথা উপজেলা মাল্টিপারপাস হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ সাদীকের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান। এ সময় তিনি বলেন, কোনো অন্যায়কারীকে পুলিশ ছাড় দেবে না। সংঘর্ষ করে কেউ লাভবান হতে পারে না। আপনি বিপদে পড়লে আপনার প্রতিবেশিই আপনার পাশে থাকবে। তাই প্রতিবেশীর সাথে মিলেমিশে বসবাস করুন। দাঙ্গা-সংঘর্ষ পরিহার করুন। সংঘর্ষ করে লাভবান হওয়া যায় না। আপনাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করান। শিক্ষিত মানুষ তৈরি করুন। যাতে আপনার ছেলে-মেয়ে সমাজে ভালো কাজ করে। যে কোনো প্রয়োজনে পুলিশকে জানান, আইন কখনো হাতে তুলে নেবেন না। পুলিশ সর্বদা আপনাদের পাশে আছে। পুলিশকে বন্ধু ভাবেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, যারা ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার আছেন, এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করুন। জনগণের পাশে থাকুন, ভালো কাজ করুন। কোনো এলাকায় সংঘর্ষ হলে কেউ ছাড় পাবেন না। কাইজা ও সংঘর্ষ হলে পুলিশ কাউকে ছাড় দেবে না।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কনিষ্ঠপুত্র ও তার রাজনৈতিক প্রতিনিধি শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী। তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিটি গ্রাম থেকে ঢাল-সড়কি প্রশাসনের কাছে জমা দিতে হবে। এ এলাকায় আর কোনো সংঘর্ষ আমরা দেখতে চাই না। আমার মা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আজীবন আপনাদের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তাই এই এলাকায় আর কোনো অরাজকতা দেখতে চাই না। পুলিশ কোনো সংঘর্ষকারীকে ছাড় দেবে না। তাই সবাই মিলেমিশে এলাকায় বসবাস করুন। সংঘর্ষ পরিহার করুন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সালথা-নগরকান্দা সার্কেল) মো: সুমিনুর রহমান, সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মো: ওয়াদুদ মাতুব্বর, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফারুক উজ্জামান ফকির মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী সাব্বির আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও আটঘর ইউপি চেয়ারম্যান মো: শহীদুল হাসান খাঁন সোহাগ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম, সালথা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লেবু মোল্যাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সংরক্ষিত নারী সদস্য ও গ্রাম্য মাতুব্বরা।
উল্লেখ্য, ফরিদপুরের সালথায় গত ১১ নভেম্বর ২য় ধাপে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হলেও উপজেলার সর্বত্র নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ও গ্রাম্য দলপক্ষকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। নির্বাচন পরবর্তী দাঙ্গা-হাঙ্গামার কারণে সাধারণ জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাঠের ফসল থেকে শুরু করে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সবকিছু। চলতি মাসে উপজেলার সর্বত্র প্রায় ২৫/৩০টির মতো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আটক করা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রাম্য মাতুব্বরসহ শতাধিক ব্যক্তিকে।