কাপ্তাইয়ে বরইছড়ি সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারে সর্ববৃহৎ কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন,হাজারো পূণ্যার্থীর ঢল
শান্তি ও মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে হাজারো পুণ্যার্থীর শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যের মধ্যদিয়ে রাঙ্গামাটি কাপ্তাইয়ে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বরইছড়ি মারমা পাড়া সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ৪র্থ তম কঠিন চীবর দানোৎসব ও বৌদ্ধ বিহার দ্বিতল ভবণ উৎসর্গের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বরইছড়ি সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার দায়ক দায়িকাদের আয়োজনে
সকাল থেকে শুরু হয়ে রাত অবধি বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়।
চীবর উৎসর্গের সময় ভক্তদের সাধু, সাধু, সাধু কণ্ঠধ্বনিতে বরইছড়ি সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারে
সমগ্র আশেপাশে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
এতে সভাপতিত্ব করেন বরইছড়ি পাড়া সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উঃ পঞাসারা মহাথের এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজনিকায় মার্গে ৬ষ্ঠ মহাসংঘনায়ক, ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের পূজনীয় বিহারাধ্যক্ষ উঃ পামোক্ষা মহাথের প্রধান সদ্ধর্ম দেশক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান সদরস্থ বৈক্রিছড়া আগাপাড়া বৌদ্ধ বিহারের পূজনীয় বিহারাধ্যক্ষ উঃ পঞ্ঞালংকার মহাথের।
এসময় আগত দায়ক দায়িকার উদ্দেশ্যে প্রধান স্বধর্ম দেশনায় দিয়ে বলেন, কৌশল কর্ম, সৎ চেতনা ও সৎ জীবন নিয়ে জীবন যাপন করার জন্য হিতোপোদেশ দেন।বিহার কমিটির অর্থ সম্পাদক আমুইচিং মারমা সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পাইমং মারমা সাধারণ সম্পাদক অংসুইউ মারমা, সমাজ সেবক অংসাচিং মারমা আপাই মারমাসহ আরও অনেকে।
দিনব্যাপী দানোত্তম কঠিন চীবর উপলক্ষে দূর দূরান্ত থেকে পুণ্য সঞ্চয়ী করার জন্য শতশত পুণ্যার্থীরা বিহারে সমবেত হয়।
এদিকে, বড়ইছড়ি পাড়া সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের ‘দ্বিতীয় তলা উৎসর্গ, প্রব্রজ্যা গ্রহণ এবং দানের শ্রেষ্ঠ, দানের রাজা দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব’ পুণ্যময় অনুষ্ঠান যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে উদযাপিত হয়েছে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে কঠিন চীবর দান ছাড়াও, বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কল্পতরু দান, বিশ্বশান্তি প্যাগোডার অর্থ দান, হাজার প্রদীপ দান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। প্রাচীন নিয়ম মতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সূতা কেটে, সূতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরী করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান।
বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পাইমং মারমা বলেন, বৌদ্ধদের যত ধরনের দান রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে পুণ্যের দান হলো কঠিন চীবর দান। এজন্য কঠিন চীবর দানোৎসবকে দানোত্তম চীবর দান উৎসব বলা হয়ে থাকে।
এদিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দিনব্যাপী সর্ববৃহৎ ৪’র্থ তম কঠিন চীবর ধর্মীয় উৎসবে সকল সম্প্রদায়ের মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে কাপ্তাই বরইছড়ি পাড়া সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণের আশেপাশে এলাকায় হরেক রকম জিনিস নিয়ে পরশা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা।





















