সাফল্যের গল্পের বিপক্ষে কতিপয় মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে বিরোধিতা করবেই বলে মন্তব্য করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
নিজের ফেইসবুকে পেইজে বুধবার রাতে একটি পোস্টে এ মন্তব্য করে তিনি লিখেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের প্রেতাত্মারা যাতে অন্ধকার অধ্যায় ফিরিয়ে আনতে না পারে, সেজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে।
গত ৬ মে নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টের’ একটি ভিডিও ওই পোস্টে দিয়েছেনে সজীব ওয়াজেদ। তার বর্ণনায় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সহায়তায় ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর ভূমিকা তুলে ধরে তিনি এসব কথা লেখেন।
১৯৭১ সাল, হাজার হাজার মাইল সাগর দূরত্বের একটি দেশ তার লালসবুজ পতাকা রক্ষায় রক্ত ঝরাচ্ছিল। আর বন্ধুর মুখে সেই দেশটির গল্প গভীরভাবে নাড়া দিল বিশ্ব সঙ্গীতের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় একজন শিল্পীকে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা, অসংখ্য নারীদের ধর্ষণ আর অনাহারে শিশুদের মৃত্যু তাকে মর্মাহত করল। ঠিক তখনই কিছু কাব্যিক শব্দ একটি অবিস্মরণীয় গানের লিরিক আকারে ফুটে উঠল।
খ্যাতনামা ব্রিটিশ ব্যান্ডদল বিটলসের ভোকাল ও লিড গিটারিস্ট জর্জ হ্যারিসনের গাওয়া ইংরেজি ওই গানটির বাংলা ভাষান্তর নিজের পোস্টে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।
চোখ ভরা বিষাদ নিয়ে আমার বন্ধু আমার কাছে এসেছিল,তার দেশ শেষ হয়ে যাবার আগে পাশে দাঁড়ানো দরকার বলে আমাকে জানিয়েছিল।
মনে যা এসেছিল, শুধু তাই দিয়ে গানটি রচনা করলেন না বিটলস তারকা জর্জ হ্যারিসন। বরং ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস একটি গণহত্যার শিকার হওয়া বাংলাদেশের জনগণকে সাহায্য করার চিন্তায় মগ্ন তখন। ছুটে গেলেন বব ডিলান এবং এরিক ক্ল্যাপটনের মতো কিংবদন্তিদের কাছে। তারাও বাংলাদেশকে সমর্থন যোগাতে সম্মত হন। আর বাকিটা তো ইতিহাস।
কনসার্ট ফর বাংলাদেশের মাধ্যমে তারা যুদ্ধের শিকার দেশকে সাহায্য করার নজির স্থাপন করেছে। যখনই আমি এটি ইউটিউবে দেখি, এটি আমাকে একটি সোনালী মুহূর্তে ফিরিয়ে নিয়ে যায়-
জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশ গানটি গাইছেন, কানে ভাসছে বব ডিলানের ‘হাউ মেনি রোডস অ্যা ম্যান মাস্ট ওয়াক ডাউন (কতটা পথ পেরলে বলো পথিক হওয়া যায়)’, ঝড়ের মতো তার সেতারে সুর তুলছেন পন্ডিত রবিশঙ্কর। একই মঞ্চে সকল তারাদের মেলা!
বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীতে সেই মুহূর্তকে আরেকটি কনসার্টের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা তুলে ধরেন জয়।
বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রকস্টার ও গানের সম্রাটরা যেমনটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশের স্বপ্ন সত্যি হল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ বিধ্বস্ত সেই দেশটি এখন টেকসই অগ্রগতি এবং উন্নয়নের একটি প্রতিকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
বাংলাদেশ স্থাপত্যের দৃষ্টিনন্দন কর্মযজ্ঞ পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- এক অনুপ্রেরণার ইতিহাস রচনা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুবর্ণজয়ন্তীতে সবাইকে সোনার বাংলার প্রতিশ্রুতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আসুন হ্যারিসনের বাংলাদেশ গানটি আরও একবার গাই এবং বিশ্ব আবার শুনুক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই হল এবারের সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমাদের প্রতিশ্রুতি।