ভারতীয় ক্রিকেটের মহারাজাখ্যাত সৌরভ গাঙ্গুলি এক সময় দায়িত্বে ছিলেন বিসিসিআইয়ের। একই সময় জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন বিরাট কোহলি। সেই সময়ই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রথম সামনে আসে। পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন গাঙ্গুলি ও কোহলি। সেই দ্বন্দ্ব গড়িয়ে আসে আইপিএলের মাঠ পর্যন্ত। দিল্লি ক্যাপিটালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি দেখায় হাত মেলানোর সময় তারা এড়িয়ে যান একে অপরকে। কোহলি এরপর আবার গৌতম গম্ভীরের সঙ্গেও বিবাদে জড়ান। চলমান সেই উত্তাপ কমিয়ে, এবার কোহলির সঙ্গে সম্পর্কে উষ্ণতা দিয়েছেন গাঙ্গুলি।
গত ১৫ এপ্রিল আইপিএলের এবারে আসরে প্রথমবার মুখোমুখি হয় দিল্লি-বেঙ্গালুরু। দিল্লির মাঠে সেই দেখায় কোহলির বেঙ্গালুরু জয় পায়। তবে ম্যাচে গাঙ্গুলির দিকে তাকিয়ে একাধিকবার আগ্রাসী উদযাপন করেন কোহলি। যা ম্যাচ শেষে হাত মেলানোর সময়ও উত্তাপ ছড়ায়। দু’দলের ক্রিকেটার ও কোচিং প্যানেল সারিবদ্ধভাবে হাত মেলানোর সময় গাঙ্গুলি ও কোহলি পরস্পরকে এড়িয়ে যান। এরপর মাঠ থেকে দ্বন্দ্ব গিয়ে পৌঁছায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ইনস্টাগ্রামে প্রথমে কোহলি আনফলো করে দেন গাঙ্গুলিকে। এরপর ফলো তালিকা থেকে গাঙ্গুলি কোহলিকেও ছাটাই করেন।
সর্বশেষ ৬ মে রাতে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে বেঙ্গালুরুতে যায় গাঙ্গুলির দিল্লি। এদিন আগে ব্যাট করা বেঙ্গালুরুর ১৮২ রানের জবাব সফরকারীরা ভালোভাবেই দিয়েছে। মূলত ইংলিশ ব্যাটার ফিল সল্টের বিধ্বংসী ব্যাটিং তাদের জয় সহজ করে দেয়। এরপর সবাই ভেবেছিল আবারও একই দৃশ্যের উত্থান হবে। তবে এবার আর তা হতে দেননি গাঙ্গুলি। উভয় দলের খেলোয়াড় ও স্টাফরা করমর্দনের একপর্যায়ে কোহলি-গাঙ্গুলি সামনাসামনি চলে আসেন। কিন্তু এবার আর একে অপরকে এড়িয়ে যাননি। দুজন হাত তো মেলালেনই, সেই সঙ্গে কোহলির কাঁধে হাত রেখে কিছু বললেন গাঙ্গুলি। দুই ক্রিকেট তারকার মধ্যে কী কথা হয়েছিল তা জানা যায়নি। কিন্তু গম্ভীর-কোহলি দ্বন্দ্বের পর এই ছবি মনে জয় করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
এদিন অবশ্য ম্যাচ চলাকালেও আমান খানের ক্যাচ ধরে কোহলি দিল্লির ডাগআউটের দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়েছিলেন। সেখানে তখন বসেছিলেন দলের ‘ডিরেক্টর অব ক্রিকেট’ গাঙ্গুলি। সেই সময় তিনি পাল্টা কোনো অভিব্যক্তি না দিলেও, ম্যাচ শেষে বোঝা যায় যে তিনিও বিরাটের সঙ্গে কথা বলতে চাননি।
সম্প্রতি কোহলি ও গম্ভীরের মধ্যকার প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। লখনৌর সঙ্গে বেঙ্গালুরুর ম্যাচ শেষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় গম্ভীর–কোহলির। সতীর্থরা এসে না সরালে এই কথা–কাটাকাটি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেতে পারতো। যা নিয়ে দুজনকেই ম্যাচ ফির শতভাগ জরিমানা করে বিসিসিআই। যদিও তাদের সেই শাস্তিকে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটাররা। সুনীল গাভাস্কার ও বীরেন্দর শেবাগরা তাদেরকে ম্যাচ থেকে নিষিদ্ধ কিংবা নির্বাসনের দাবি তোলেন।
এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোহলির নাম উল্লেখ না করেই পোস্ট করে গম্ভীর। কোহলিও শাস্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ করেননি উল্লেখ করে বিসিসিআইকে চিঠি দেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। সেই উত্তাপের মধ্যে কোহলি ও গাঙ্গুলির নতুন করে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটে কিনা আশঙ্কা ছিল। তা মিটে গেছে গাঙ্গুলি-কোহলির মুখোমুখি আলাপে। কিছুটা হলেও যা স্বস্তি এনেছে ক্রিকেট মহলে।