ঢাকা , রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দেশে এখন ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ দীঘিনালায় অবৈধ বালু উত্তোলনে ১ লাখ টাকা জরিমানা কাপ্তাইয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পরিবেশের ক্ষতি না করে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিতেই রাজি এনসিপি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন অপরিহার্য: মিয়া নূরউদ্দিন আহাম্মেদ অপু নির্বাচনের তফসিল কবে, জানালেন ইসি আনোয়ারুল একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করার চিন্তা করছে সরকার জামগড়া আর্মি ক্যাম্পের রাতভর অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার তিনজন রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলা যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত

খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীলতার জন্য ইউপিডিএফ দায়ী- সেনাবাহিনীর প্রেস ব্রিফিং

সাংবাদিক

সোমবার প্রেস ব্রিফিং করেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ

খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের জের ধরে সেখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন, ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে সাধারণ পাহাড়ি নারী ও কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের সামনে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে ইউপিডিএফ। এসব কর্মসূচিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে দেশীয় ও অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে ফায়ার করা হচ্ছে।

নানা অপপ্রচার ও উস্কানি সত্ত্বেও সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও অবিচ্ছেদ্য অংশ রক্ষায় সবকিছু করবে বলেও অঙ্গীকার করেছেন রিজিয়ন কমান্ডার। ইউপিডিএফকে দেশের স্বার্থে অবরোধ তুলে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। সবখানে থমথমে অবস্থা। জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার দুপুরে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হলেও আজ মঙ্গলবার যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। অভ্যন্তরীণ সড়কেও যানবাহন চলছে না। তবে, নতুন করে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

আজও খাগড়াছড়ি শহর, শহরতলী ও গুইমারার অধিকাংশ দোকানপাট খোলেনি। শহরে সীমিত পরিসরে ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ির কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকেই বের হচ্ছেন না।

গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, খাগড়াছড়ির গুইমারায় সহিংসতায় নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাতের মধ্যেই দাহ করা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।

এসব এলাকায় সেনাবাহিনীর টহলের পাশাপাশি ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা বহাল আছে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হবে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, সোমবার কোনো একসময় খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আন্দোলনকারী জুম্ম ছাত্র-জনতার ছয় প্রতিনিধি। তারা ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়াসহ ৮ দাবি তুলে ধরেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে, বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। যদিও দায়িত্বশীল কেউ বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের জের ধরে রবিবার গুইমারায় সহিংসতায় তিনজন নিহত এবং সেনা কর্মকর্তাসহ কয়েকজন আহত হন। গুইমারায় পুড়িয়ে দেওয়া হয় রামসু বাজারসহ বহু ঘর-বাড়ি ও অফিস। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন। এ সহিংসতার জন্য পাহাড়ি ও বাঙালি পরস্পরকে দায়ী করছেন।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৭:৫২:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৫৯৮ Time View

খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীলতার জন্য ইউপিডিএফ দায়ী- সেনাবাহিনীর প্রেস ব্রিফিং

আপডেটের সময় : ০৭:৫২:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সোমবার প্রেস ব্রিফিং করেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ

খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের জের ধরে সেখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন, ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে সাধারণ পাহাড়ি নারী ও কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের সামনে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে ইউপিডিএফ। এসব কর্মসূচিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে দেশীয় ও অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে ফায়ার করা হচ্ছে।

নানা অপপ্রচার ও উস্কানি সত্ত্বেও সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও অবিচ্ছেদ্য অংশ রক্ষায় সবকিছু করবে বলেও অঙ্গীকার করেছেন রিজিয়ন কমান্ডার। ইউপিডিএফকে দেশের স্বার্থে অবরোধ তুলে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। সবখানে থমথমে অবস্থা। জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার দুপুরে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হলেও আজ মঙ্গলবার যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। অভ্যন্তরীণ সড়কেও যানবাহন চলছে না। তবে, নতুন করে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

আজও খাগড়াছড়ি শহর, শহরতলী ও গুইমারার অধিকাংশ দোকানপাট খোলেনি। শহরে সীমিত পরিসরে ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ির কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকেই বের হচ্ছেন না।

গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, খাগড়াছড়ির গুইমারায় সহিংসতায় নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাতের মধ্যেই দাহ করা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।

এসব এলাকায় সেনাবাহিনীর টহলের পাশাপাশি ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা বহাল আছে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হবে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, সোমবার কোনো একসময় খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আন্দোলনকারী জুম্ম ছাত্র-জনতার ছয় প্রতিনিধি। তারা ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়াসহ ৮ দাবি তুলে ধরেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে, বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। যদিও দায়িত্বশীল কেউ বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের জের ধরে রবিবার গুইমারায় সহিংসতায় তিনজন নিহত এবং সেনা কর্মকর্তাসহ কয়েকজন আহত হন। গুইমারায় পুড়িয়ে দেওয়া হয় রামসু বাজারসহ বহু ঘর-বাড়ি ও অফিস। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন। এ সহিংসতার জন্য পাহাড়ি ও বাঙালি পরস্পরকে দায়ী করছেন।