ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খোকসা নারায়নপুর গুচ্ছগ্রামের ২৬ ঘরের ১৪ ঘরে তালা বদ্ধ

সাংবাদিক

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

ভূমিহীনদের আবাসন প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গুচ্ছগ্রামে বিগত সরকারের আমলে ভূমিহীনদের জন্য নির্মান করা হয় ২৬টি ঘর।
এর মধ্যে বাস করছে মাত্র ১২টি পরিবার। বাকি ১৪টি ঘরে কেউ নিয়মিত থাকে না। এদের মধ্যে ৫ থেকে ৬টি ঘরে কোনো পরিবারই থাকেইনি। রয়েছে তালা মারা।

সোমবার সকালে সাড়ে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে সরকারের দেওয়া গুচ্ছগ্রামের আবাসন প্রকল্পের ঘর গুলোতে কেও বসবাস না করায় খুইয়ে খুইয়ে পড়ছে ঘরের পলেস্টার। ক্ষুব্ধ কন্ঠে আবাসনে থাকা একাধিক ব্যক্তিরা অভিযোগ করলেন রাজনৈতিক বিবেচনায় বেশ কয়েকটি ঘর বরাদ্দ দেওয়ায় আজও পর্যন্ত আবাসন গুচ্ছগ্রামে আসেনি তারা।
নাম প্রকাশ না শর্তে আবাসনেরই এক বাসিন্দা জানান,
এখানে অনেকেই ঘর পাওয়ার পর অন্যত্র চলে গেছে বা ব্যবহার করছে না, অথচ অনেক গরিব মানুষ ঘর না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এটা কী ন্যায়সঙ্গত?

একটি ঘরের বৈদ্যুতিক মিটার আগুনে পুড়ে গেছে। পার্টিতে কেউ বসবাস করেনি, বর্তমানে তালা মারা রয়েছে। কেউ তা দেখতে আসেনি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ নেই, কোনো তদারকি নেই— যেন এসব ঘর পড়ে আছে একেবারে উপেক্ষিত অবস্থায়।

সংখ্যালঘু এক বাসিন্দা নারী বলেন, আমার নিজের ঘর নেই, দিন আনি দিন খাই, রাতে কোথাও জায়গা হয় তো ঘুমাই। অথচ দেখি তালা মারা সরকারি ঘর ফাঁকা পড়ে আছে!

কয়েকদিন আগে উপজেলার কয়েকজন অসহায় ও খেটে খাওয়া নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন বন্ধ থাকা ঐ সকল ঘর বরাদ্দের দাবিতে। তাদের দাবি একটাই, আমরা ঘর চাই, মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।

ঘটনাস্থলে ঘুরে দেখা যায়,গুচ্ছগ্রামের অনেক ঘর বছরের পর বছর তালাবদ্ধ, কেউ আসেও না, যায়ও না। অথচ প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছেন। এটি শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, প্রশাসনের চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর মতো একটি বিষয়।

আবাসনে বসবাসকারী প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, আমরা দেখেছি যারা প্রকৃত ভূমিহীন তারা ঘর পায় না, আর যাদের প্রভাব আছে তারা ঘর পেয়ে ব্যবহারও করে না।

এ বিষয়ে খোকসা উপজেলা সহকারে কমিশনার (ভূমি) রেশমা খাতুন বলেন, জানিপুরের নারায়ণপুর আবাসন প্রকল্পের বিষয়টি কি অবস্থায় আছে আমার জানা নাই। তদন্ত করে দেখে জানাতে পারব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদীপ্ত রায় দীপন বললেন, আশ্রম প্রকল্পের ২৬ টা ঘরের চৌদ্দ ঘরের বাসিন্দারা নিয়মিত থাকেন এবং বাকি যারা থাকেন না তাদের তালিকা আমার কাছে রয়েছে। তাদের কবুলিয়াত নামাজে দলিল রয়েছে সেটা বাতিল করার জন্য জেলা কমিটির মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। সকল ব্যক্তিদের কবুলিয়াতনামা দলিল বাতিল হলেই নতুন যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে থেকে প্রকৃত ভূমিহীন ও প্রাপ্য ব্যক্তিদের কে তুলে দোয়া হবে।
তবে ঘরগুলো মেরামত করা খুব জরুরি বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৫:১২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
৫১৬ Time View

খোকসা নারায়নপুর গুচ্ছগ্রামের ২৬ ঘরের ১৪ ঘরে তালা বদ্ধ

আপডেটের সময় : ০৫:১২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

ভূমিহীনদের আবাসন প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গুচ্ছগ্রামে বিগত সরকারের আমলে ভূমিহীনদের জন্য নির্মান করা হয় ২৬টি ঘর।
এর মধ্যে বাস করছে মাত্র ১২টি পরিবার। বাকি ১৪টি ঘরে কেউ নিয়মিত থাকে না। এদের মধ্যে ৫ থেকে ৬টি ঘরে কোনো পরিবারই থাকেইনি। রয়েছে তালা মারা।

সোমবার সকালে সাড়ে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে সরকারের দেওয়া গুচ্ছগ্রামের আবাসন প্রকল্পের ঘর গুলোতে কেও বসবাস না করায় খুইয়ে খুইয়ে পড়ছে ঘরের পলেস্টার। ক্ষুব্ধ কন্ঠে আবাসনে থাকা একাধিক ব্যক্তিরা অভিযোগ করলেন রাজনৈতিক বিবেচনায় বেশ কয়েকটি ঘর বরাদ্দ দেওয়ায় আজও পর্যন্ত আবাসন গুচ্ছগ্রামে আসেনি তারা।
নাম প্রকাশ না শর্তে আবাসনেরই এক বাসিন্দা জানান,
এখানে অনেকেই ঘর পাওয়ার পর অন্যত্র চলে গেছে বা ব্যবহার করছে না, অথচ অনেক গরিব মানুষ ঘর না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এটা কী ন্যায়সঙ্গত?

একটি ঘরের বৈদ্যুতিক মিটার আগুনে পুড়ে গেছে। পার্টিতে কেউ বসবাস করেনি, বর্তমানে তালা মারা রয়েছে। কেউ তা দেখতে আসেনি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ নেই, কোনো তদারকি নেই— যেন এসব ঘর পড়ে আছে একেবারে উপেক্ষিত অবস্থায়।

সংখ্যালঘু এক বাসিন্দা নারী বলেন, আমার নিজের ঘর নেই, দিন আনি দিন খাই, রাতে কোথাও জায়গা হয় তো ঘুমাই। অথচ দেখি তালা মারা সরকারি ঘর ফাঁকা পড়ে আছে!

কয়েকদিন আগে উপজেলার কয়েকজন অসহায় ও খেটে খাওয়া নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন বন্ধ থাকা ঐ সকল ঘর বরাদ্দের দাবিতে। তাদের দাবি একটাই, আমরা ঘর চাই, মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।

ঘটনাস্থলে ঘুরে দেখা যায়,গুচ্ছগ্রামের অনেক ঘর বছরের পর বছর তালাবদ্ধ, কেউ আসেও না, যায়ও না। অথচ প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছেন। এটি শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, প্রশাসনের চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর মতো একটি বিষয়।

আবাসনে বসবাসকারী প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, আমরা দেখেছি যারা প্রকৃত ভূমিহীন তারা ঘর পায় না, আর যাদের প্রভাব আছে তারা ঘর পেয়ে ব্যবহারও করে না।

এ বিষয়ে খোকসা উপজেলা সহকারে কমিশনার (ভূমি) রেশমা খাতুন বলেন, জানিপুরের নারায়ণপুর আবাসন প্রকল্পের বিষয়টি কি অবস্থায় আছে আমার জানা নাই। তদন্ত করে দেখে জানাতে পারব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদীপ্ত রায় দীপন বললেন, আশ্রম প্রকল্পের ২৬ টা ঘরের চৌদ্দ ঘরের বাসিন্দারা নিয়মিত থাকেন এবং বাকি যারা থাকেন না তাদের তালিকা আমার কাছে রয়েছে। তাদের কবুলিয়াত নামাজে দলিল রয়েছে সেটা বাতিল করার জন্য জেলা কমিটির মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। সকল ব্যক্তিদের কবুলিয়াতনামা দলিল বাতিল হলেই নতুন যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে থেকে প্রকৃত ভূমিহীন ও প্রাপ্য ব্যক্তিদের কে তুলে দোয়া হবে।
তবে ঘরগুলো মেরামত করা খুব জরুরি বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।