ফরিদুল আলম রুপন:
নগর সমন্বয় কমিটির সভায়
চাঁদপুর পৌর সভার মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেছেন, চাঁদপুর শহরের খেলার মাঠগুলো উন্মুক্ত করে খেলার উপযোগী করে দেওয়া এখন সময়ের দাবী। আমি পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে সময়ের এই দাবীর সাথে একমত পোষন করছি। তিনি পৌরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, চলতি বছরের বাজেটের পর পৌর নাগরিকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা বৃওি এবং পৌর পরিষদের ব্যবস্হাপনায় ব্ল্যাড ব্যাংকের চালু করা হবে। মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল ১৪ জুন মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিন টায় চাঁদপুর পৌর পাঠাগারে তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরন প্রকল্প -৩ (UGiip-3) এর আওতায় নগর পরিচালন উন্নতিকরন কর্মসূচি (UGiAP) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নগর সমন্বয় কমিটির ( TLCC) সভায় সভাপতির বক্তব্যে কথা গুলো বলেন।
চাঁদপুর পৌর সভার প্রধান সহকারী মোঃ মফিজুল ইসলাম হাওলাদারের উপস্থাপনায় সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করেন পৌর সভা মসজিদের খতিব মাওঃ জাকির হোসেন। নগর সমন্বয় কমিটির সদস্য ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমানের বক্তব্যে পৌর সভার উন্নয়ন মুলক অবকাঠামোগত কাজ গুলো আরো দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার আহবান জানান।
নগর সমন্বয় কমিটির সদস্য দৈনিক চাঁদপুর কন্ঠের প্রধান সম্পাদক, রোটাঃ কাজী শাহাদাত পিএইচএফ বলেন চাঁদপুর শহরের যানজট নিরসনে শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কস্থ লেকের পশ্চিম পার্শ্বের সাবেক সিএনজি স্ট্যান্ড হয়ে রেল লাইনের উপর দিয়ে আদালত পাড়া সড়কটি, পালবাজার বকুলতলা সড়ক হয়ে রেললাইনের উপর দিয়ে বাইপাস সড়ক, মমিন পাড়া, প্রফেসর পাড়া হয়ে বড়স্টেশন লঞ্চ ঘাটের বাইপাস সড়ক করার জন্য সভায় পৌর মেয়রের প্রতি আহবান জানান।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্হানে আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। সর্বোপরি চাঁদপুর পৌর এলাকায় বাংলাদেশ রেলওেয়ের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বিভিন্ন ভাবে পড়ে রয়েছে। এগুলো রেলওয়ের সাথে চাঁদপুর পৌর সভার মেয়র মহোদয় সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজে লাগানোর জন্য অনুরোধ জানান, প্রয়োজনে পৌর নাগরিকদের সহযোগিতা নিয়ে এ ব্যাপারে পৌর পরিষদকে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। সভায় নগর সমন্বয় কমিটির সদস্য প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, বড় স্টেশন টু ওয়ারলেস মোড় পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণের গুরুত্ব আরোপ, পৌর সভার শিশু পার্কটি সংস্কার ও উন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বক্তব্য দেন।
সভায় এছাড়া বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নগর সমন্বয় কমিটির সদস্য রাধা গোবিন্দ ঘোষ,বিলকিস বেগম, বিউটি রানী সরকার, ফাতেমা আক্তার বক্তব্য রাখেন। সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে পৌর মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল নগর সমন্বয় কমিটির সদস্য রোটাঃ কাজী শাহাদাতের বক্তব্যের উদ্ব্দতি দিয়ে বলেন, শহরের যানজট নিরসনে শহরের লেকের পাড়ের পশ্চিম পার্শ্বের সাবেক সিএনজি স্ট্যান্ড হয়ে রেললাইনের উপর দিয়ে আদালত পাড়া বাইপাস সড়ক ও পালবাজার বকুলতলা বাইপাস সড়ক শীঘ্রই চালু করার জন্য সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি প্রফেসর পাড়া মমিন পাড়া হয়ে বড়স্টেশন লঞ্চ ঘাট বাইপাস সড়কটি নির্মাণে পৌর পরিষদের পরিকল্পনা নিয়েছেন । তিনি রেলওয়ে সম্পওি পৌর নাগরিকদের কাজে ব্যবহারের বিষয়ে বলেন, চাঁদপুর পৌর সভার পক্ষ থেকে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ সরকারের রেলওয়ে মন্ত্রীকে চাঁদপুরে আমন্ত্রণ জানানো হবে। পাবলিক টয়লেটের বিষয়ে বলেন, চলতি বছরের মধ্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৪টি স্হানে ৪ টি আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি ব্লাড ব্যাংক স্হাপন, পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে শিক্ষা বৃওি চালু করা হবে বলে জানান। তিনি শহরের যানজট নিরসনে ইচলী নৌঘাট এলাকায় একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হবে এবং এটি নির্মাণ প্রক্রিয়া সহসাই চালু হবে বলে জানান। খেলা ধূলার চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠ ও পুরান বাজার ডিগ্রী কলেজ মাঠকে বিকেলে খেলার জন্য উপযোগী করে উন্মুক্ত করে দেওয়া এখন সময়ের দাবি বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। পুরানবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠকে খেলার উপযোগী করার আশ্বাস দেন। পুরান বাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংস্কার, বঙ্গবন্ধুর মুরাল নির্মাণ এবং উন্মুক্ত মঞ্চ করে দিবেন বলে জানান।
তিনি পুরান বাজার ও নতুন বাজার এলাকায় লাশ সংরক্ষণ ঘর এবং লাশ ধৌত করন ঘর করা হবে বলে সভায় জানান । মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, শহরের বড়স্টেশন টিলাবাড়ি এলাকার খালের মাঝামাঝি স্হানে একটি ঘাটলা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন।এছাড়া শহরের খাল সংস্কার ও খাল উদ্ধার বিষয়ে তিনি বলেন, পুরান বাজার নাপিত বাড়ি খালটি উদ্ধার কে আমরা টেস্ট কেইস হিসেবে নিয়েছি, এটির সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে, অবৈধ দখলদারের বলা হয়েছে আমরা খাল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করলে অবৈধ স্হাপনা সরিয়ে নেবেন বলে দখলদাররা জানিয়েছেন।
তিনি চাঁদপুর পৌর এলাকায় চলমান উন্নয়ন কাজ প্রসঙ্গে বলেন, এই কাজ গুলো ফেব্রুয়ারী মাসে টেন্ডার হয়েছে, কিন্তু কাজ গুলো আরো আগে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু মালামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদারগন কাজ করতে চায়নি। কারণ অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজ গুলো শেষ হয়ে যাবে।
তিনি উন্নয়ন কাজ চলাকালীন সময়ে নাগরিকদের ভোগান্তির বিষয় দুঃখ প্রকাশ করেন। উক্ত নগর সমন্বয় কমিটির সভায় সভার সকল সদস্যগণ, পৌর সভার প্যানেল মেয়রগণ,সকল কাউন্সিলর, পৌর সভার সচিব, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও পৌর সভার সিনিয়র সিটিজেনগন উপস্থিত ছিলেন।