নারায়াণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা যে শপথ গ্রহণ করেছেন জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন; সেই শপথটা কখনও ভুলবেন না। উন্নয়নের যে গতিধারা সৃষ্টি করেছি সেটাও অব্যাহত রাখতে হবে। এখানে থেমে থাকলে চলবে না। আপনারা মানুষের কাছে যে ওয়াদা দিয়ে ভোট নিয়েছেন সেই ওয়াদা কখনও ভুলবেন না। মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর শপথ পাঠ করানোর পর নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। গণভবন থেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মেয়র আইভীকে শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। এরপর কাউন্সিলরদের শপথ পাঠ করান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো একজন রাজনৈতিক নেতার জন্য নিজের স্বার্থ না দেখে পরের স্বার্থে কাজ করা, জনগণের কতটুকু দিতে পারলাম, কতটুকু তাদের জন্য করতে পারলাম সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। যতটুকু আপনি দিতে পারবেন তাতেই আত্মতৃপ্তি, নিজের ভোগবিলাসের জন্য রাজনীতি না। রাজনৈতিক নেতা হতে হলে জনকল্যাণে কাজ কাজ করতে হয়, নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে হয়। জাতির পিতা সেই আদর্শ আমাদের শিখিয়ে গেছেন। আশা করি সেই আদর্শ নিয়েই আপনারা চলবেন। তাহলে আপনার নেতৃত্বও থাকবে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবেন, বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে নির্বাচনের আগে বলেছিলাম আওয়ামী লীগ যদি সরকারে আসে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। তখন আমরা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা দেই। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার পাশাপাশি মধ্যমেয়াদী কর্মসূচি গ্রহণ করি। সেই নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট জয়লাভ করে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত সরকারে আছি। জনগণের আস্থা নিয়েই আমরা সরকারে আছি। দেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, একটানা ১৩ বছর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে আজকে দেশের উন্নতি হচ্ছে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছি। শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। উন্নয়নের যে গতিধারা সৃষ্টি করেছি এটা যেন কখনও থেমে না যায়। কারণ নারায়ণগঞ্জ ঠিক ঢাকার পাশেই একটি শহর। নারায়ণগঞ্জের অঞ্চলের সার্বিক উন্নতির জন্য অনেক পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া বারবার ব্যাহত হচ্ছে। তারপরও তাদের লেখাপড়া যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য আমরা রেডিও, টেলিভিশনে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি এখন যে ওমিক্রন দেখা দিয়েছে, এর হাত থেকেও মুক্তি পাবে বাংলাদেশ। আবার খুলে যাবে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালে কেমন হবে বাংলাদেশ। আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কিভাবে গড়বো। সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও দিয়েছি। ২১০০ সালে আমাদের ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। এই ব-দ্বীপটা জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা পেয়ে এদেশের মানুষ যেন সুন্দর জীবন পায় সেই ব্যবস্থা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের অধিকার সুরক্ষিত রেখে আমরা দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন। মানুষের কাছে যে ওয়াদা দিয়ে ভোট নিয়েছেন, সেই ওয়াদা কখনও ভুলবেন না। মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন।