৭ ই জুন,২০২৪, শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ বিষয়ক সেমিনারের ৯৩৭ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। জানিপপ কর্তৃক আয়োজিত জুম ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জানিপপ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও।
সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি গবেষক বি সি এস এডুকেশন ক্যাডার এর সদস্য সহকারী অধ্যাপক বাবু রণজিৎ মল্লিক
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন ইউএন ডিজএ্যাবিলিটিজ রাইটস্ চ্যাম্পিয়ন ও প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার ও উন্নয়নের প্রবর্তক আবদুস সাত্তার দুলাল।
সেমিনারে বিশেষ অতিথিবৃন্দ হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. আদনান রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিসেস আকলিমা আক্তার, কাজী ফারজানা ইয়াসমিন, পিএইচডি গবেষক এবং কোর্স টিউটর, ইউনিভার্সিটি সাইন্স মালয়েশিয়া, পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ মাসুদ আহমেদ ও বিশিষ্ট নারী উদ্যোগক্তা মিসেস পারভীন আক্তার।
সেমিনারে গেস্ট অফ অনার হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের স্বনামধন্য শিক্ষক প্রফেসর ড. জেবুন্নেসা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকার ও নাট্যব্যক্তিত্ব সন্দীপন কুমার বিশ্বাস, জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির একদল শিক্ষার্থী।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা সারাটি জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
সেমিনারের মুখ্য আলোচক পি এইচ ডি গবেষক রণজিৎ মল্লিক বলেন, আজ ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপনের দিন। ১৯৬৬ সালের লাহোরে গোল টেবিল বৈঠকে ছয় দফা দাবি পেশ করেন বঙ্গবন্ধু। লাহোর থেকে ফিরে সারা দেশ জুড়ে পাবলিক সেন্টিমেন্ট তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং এটি ছিল জাতির পিতার জীবনের দীর্ঘ মেয়াদী কারাবাস । এরই ধারাবাহিকতায় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং তা থেকে নতুন রাজনীতির বিকাশ ঘটে। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব আব্দুস সাত্তার দুলাল বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন শ্রেষ্ঠ নেতা এবং বক্তা। বঙ্গবন্ধু আমাদের মেন্টর ছিলেন ।তার তুলনা তিনি নিজেই।পৃথিবীতে তার বিকল্প কেউ হতে পারে না। তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু যত সভা সেমিনার করেছেন সেখানে নানা ধরনের দুর্যোগ হলেও জনস্রোতের কোন কমতি হতো না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের মনে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার সৃষ্টি করতে পেরেছেন । জনগণ তাকে প্রাণভরে শ্রদ্ধা করেছেন এবং তার ডাকেই নির্মাণ হয়েছে একটি স্বাধীন দেশ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. তানভীর আবীর বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার জননী শেখ হাসিনা আমাদের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নতির দিকে। তনি উল্লেখ করেন এবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় বেশি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে লক্ষ্য করা যায় তাদের শিক্ষা সংক্রান্ত বাজেট বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করতে শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোর জন্য।
পি এইচ ডি গবেষক অধ্যক্ষ মো: মাসুদ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু ৪৭ পরবর্তী সময়ে যে স্বাধীনতার সংগ্রামের স্বপ্ন দেখেছিলেন তার প্রতিশ্রুতিতে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। তৎকালীন সময়ে বুদ্ধিজীবী ও অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং নিজ উদ্যোগে ছয় দফা দাবি পেশ করেন।
লাহোরে গোলটেবিল বৈঠকে তোফাজ্জল আহমেদের উৎসাহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুক্ত হন। সেখানে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন।কিন্তু পাকিস্তান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ছয় দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করেন না ।যার প্রেক্ষিতে ১১ তারিখ দেশে ফিরে ছয় দফা উন্মোচন করেন দেশ ও দেশের মানুষের কাছে ।দেশের মানুষ তা সানন্দে গ্রহণ করেন।
যদিও আব্দুর রশিদ তর্কবাগিস বলেন , “আমি ফাঁসি দড়িতে ঝুলতে পারবো না। ”
অর্থাৎ তৎকালীন সময়েও তার দলীয় অনেকে এর বিরোধিতা করলেও পরবর্তীতে দুই মাসে ৩১টি সমাবেশ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জনমত সৃষ্টি করেছেন। তিনি পাকিস্তানি দোসরদের ভিত্তি কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন।
বিচারের নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার চেষ্টা করে এবং তারই প্রেক্ষিতে ছাত্র নেতারা ১১ দফার দাবি দেন। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১০ লক্ষ মানুষের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধুর মুক্ত হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের নাম দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. আদনান রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু না থাকলে হয়তো বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সংগ্রামী নেতা। তার একাগ্রতা এবং নেতৃত্বের গুনে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য মিসেস আকলিমা জাহান বলেন, বাঙালির মুক্তির সনদ ম্যাগনকার্টা হল ছয় দফা দাবি। এটি বিরোধীদলের কাছে ৬ দফা হলেও তা বঙ্গবন্ধুর কাছে এক দফায় পরিণত হয়। এর সাথে আরও যুক্ত ছিলেন মনু মিয়া ,শফিক ,শামসুর হক সহ ১১ জন। তাদের ত্যাগে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের দিকে এগিয়েছি।
সেমিনারে গেস্ট অফ অনার হিসেবে উপস্থিত প্রফেসর ড. জেবুন্নেসা তুলে ধরেন, জাতীয় অধ্যাপক হাশেম খানের চিত্রিত পোস্টার- “বাঙালির বাঁচার দাবি “। প্রখ্যাত শিল্পীর সাথে সরাসরি ইন্টারভিউ নেয়ার সময় তার কাছ থেকে জানতে পেরেছেন ,সেখানে যে ছয়টি দাগ আছে তা ছয়টি ঋতু কে নির্দেশ করে।
সেমিনারে যুক্ত জানিপপ এর ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার শারমিন সুলতানা শিমু বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন স্বাধীন দেশে জ্ঞানের চর্চা হোক। এমন একটি দেশ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন, গোপালগঞ্জস্থ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক প্রশান্ত কুমার সরকার।