যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল মার্কিন কংগ্রেসে বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার বিল ৩৫২-৬৫ ভোটে পাস হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
বিলটি টিকটক বিক্রি করতে বাইটড্যান্সকে প্রায় ছয় মাস সময় দেবে। সেই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটির মালিকানা যদি বাইটড্যান্স ছেড়ে না দেয় তবে অ্যাপল এবং গুগলের মতো অ্যাপ স্টোরগুলোয় নিষিদ্ধ হবে টিকটক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৭ কোটি নাগরিক অ্যাপটি ব্যবহার করেন।
হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে দুই দলেরই সমর্থন পেয়েছে বিলটি। এর পক্ষে পড়েছে ৩৫২ ভোট, আর বিপক্ষে পড়েছে মাত্র ৬৫ ভোট। বিলটি পাসের ক্ষেত্রে মার্কিন কংগ্রেসে দেখা গেছে বিরল ঐকমত্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছেন, বিলটি তার ডেস্কে আসলে তিনি তাতে স্বাক্ষর করবেন।
তবে সিনেটে আইনটির ভাগ্য কী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ সেখানে কেউ কেউ বলেছেন, বিদেশি মালিকানাধীন অ্যাপগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করলে তা নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। সে সঙ্গে, ডেমোক্রেটিক সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠের নেতা চাক শুমার কীভাবে বিলটি সম্পর্কে কী পরিকল্পনা করছেন তা এখনো জানা যায়নি।
বিলটি পাসের ব্যাপারে আইনপ্রণেতারা যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে টিকটক। কারণ, চীনা সরকার বাইটড্যান্সের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা আইন ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ ব্যবহারিকদের তথ্য পেয়ে যেতে পারে।
এই বিল পাসের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা রাখছে রাজনৈতিক দলগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একসময় প্ল্যাটফর্মটিকে নিষিদ্ধ করার প্রবক্তা ছিলেন। তবে তিনি সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। অন্যদিকে, তরুণ প্রগতিশীলদের চাপের মুখে পড়ছে ডেমোক্রেটিক পার্টি।
অন্যদিকে, টিকটকের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এবং বেইজিং বিল পাসের প্রচেষ্টা সম্পর্কে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগকে ‘গুন্ডামি’ বলে অভিহিত করেছে।
টিকটক নিষিদ্ধ হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেটিকটক নিষিদ্ধ হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়ে গেছে টিকটক। এই বিলকে প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহারকারীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারের ওপর আক্রমণ বলে অভিহিত করছে টিকটক কর্তৃপক্ষ। কল-টু-অ্যাকশন নামের প্রচারাভিযান চালু করে এর ব্যবহারকারীদের বিলটির বিরোধিতা করতে ওয়াশিংটনে প্রতিনিধিদের ফোন করার আহ্বান জানান হয়েছে। কংগ্রেস সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি অফিস জানিয়েছে, সারা দিন ধরেই আসছে ব্যবহারকারীদের ফোন।